MM Kit (মাইফেপ্রিস্টোন এবং মাইসোপ্রোস্টল) ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি সংবেদনশীল এবং জটিল প্রক্রিয়ার অংশ। সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে এটি মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
১. চিকিৎসকের পরামর্শ বাধ্যতামূলক:
-
নিজে নিজে ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
-
গর্ভধারণের সময়কাল এবং অবস্থা নিশ্চিত করতে আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করা দরকার।
-
ডাক্তার গর্ভাবস্থার বয়স (৭-৯ সপ্তাহের মধ্যে) নির্ধারণ করে পরামর্শ দেবেন।
২. শারীরিক পরীক্ষা:
ওষুধ গ্রহণের আগে নিচের বিষয়গুলো পরীক্ষা করা দরকার—
-
ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (Ectopic Pregnancy):
-
যদি ভ্রূণ জরায়ুর বাইরে (যেমন ফ্যালোপিয়ান টিউবে) অবস্থান করে, তবে এটি জীবনঘাতী হতে পারে।
-
এম এম কিট ইক্টোপিক গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়।
-
রক্তাল্পতা (Anemia):
-
যাদের হিমোগ্লোবিন কম, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বিপজ্জনক হতে পারে।
৩. ব্যবহারের সঠিক নিয়ম অনুসরণ:
-
প্রথমে মাইফেপ্রিস্টোন এবং ২৪-৪৮ ঘণ্টা পরে মাইসোপ্রোস্টল গ্রহণ করতে হয়।
-
ডাক্তার পরামর্শ দিলে কখনও যোনিপথেও মাইসোপ্রোস্টল ব্যবহার করা হতে পারে।
-
এই প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
৪. লক্ষণ পর্যবেক্ষণ:
-
ওষুধ খাওয়ার পরে ব্যথা, রক্তক্ষরণ এবং ক্লট বের হওয়া স্বাভাবিক, তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
-
জ্বর, কাঁপুনি, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হলে এটি সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে।
৫. কাদের জন্য এটি নিষিদ্ধ?
নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি ব্যবহার করা উচিত নয়:
-
ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (বাইরে গর্ভাধান)।
-
রক্তস্বল্পতা বা ব্লিডিং ডিজঅর্ডার।
-
কিডনি, লিভার বা হার্টের গুরুতর সমস্যা।
-
অ্যালার্জি: মাইফেপ্রিস্টোন বা মাইসোপ্রোস্টলে অ্যালার্জি থাকলে।
-
স্টেরয়েড থেরাপি বা ইমিউনোসাপ্রেসিভ রোগ (যেমন এইডস)।
-
অস্বাভাবিক জরায়ুর গঠন।
৬. অসম্পূর্ণ গর্ভপাতের সতর্কতা:
-
অনেক সময় গর্ভপাত সম্পূর্ণ না-ও হতে পারে, যা পরবর্তীতে সংক্রমণ এবং রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে।
-
গর্ভপাত সম্পূর্ণ হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে ৭-১০ দিনের মধ্যে আল্ট্রাসাউন্ড করানো উচিত।
৭. মানসিক ও আবেগিক প্রস্তুতি:
-
গর্ভপাত একটি মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া হতে পারে। তাই মানসিক প্রস্তুতি এবং প্রয়োজন হলে কাউন্সেলিং নেওয়া দরকার।
৮. জন্মনিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা:
-
গর্ভপাতের পরে আবার গর্ভধারণ রোধে উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা জরুরি।
-
ডাক্তার নতুন পদ্ধতির পরামর্শ দেবেন।
উপসংহার:
MM Kit ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। কোনো জটিলতা বা অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিতে হবে। এটি একাধিকবার ব্যবহার করা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে, তাই ভবিষ্যতের জন্য নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বেছে নেওয়াই উত্তম।