মুরগির ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কিছু কার্যকরী পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এগুলো সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং পরিবেশের যত্ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়।
১. পুষ্টিকর খাদ্য প্রদান
-
সুষম খাদ্য:
-
মুরগির খাদ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, মিনারেল এবং ক্যালসিয়ামের সঠিক পরিমাণ নিশ্চিত করতে হবে।
-
মাছের গুঁড়ো, ভুট্টা, গম, সয়াবিন, এবং ডিমের খোসা পিষে খাদ্যে মেশানো যেতে পারে।
-
বিশুদ্ধ পানি:
-
দিনে ২৪ ঘণ্টা বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করতে হবে।
-
পরিপূরক খাবার:
-
ভিটামিন এ, ডি, ই, এবং বি১২ এর পরিপূরক খাবার প্রয়োগ করুন।
২. সঠিক আলোর ব্যবস্থা
-
আলোর দৈর্ঘ্য:
-
ডিম উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা আলো প্রয়োজন।
-
প্রাকৃতিক আলো কম হলে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।
-
আলোর তীব্রতা:
-
প্রতিটি খাঁচার জন্য সমানভাবে আলো পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
-
নিয়মিত টিকা:
-
মুরগির রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত টিকা দিন, যেমন রানি খেত, নিউক্যাসল রোগের টিকা।
-
পরজীবী নিয়ন্ত্রণ:
-
মুরগির শরীর ও খাঁচা থেকে উকুন এবং অন্যান্য পরজীবী দূর করুন।
-
রোগ প্রতিরোধ:
-
রোগ হলে দ্রুত চিকিৎসা করুন এবং আক্রান্ত মুরগিকে আলাদা রাখুন।
৪. পরিবেশ ও বাসস্থান ব্যবস্থাপনা
-
পরিষ্কার খাঁচা:
-
খাঁচা বা মুরগির ঘর সবসময় পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
-
পর্যাপ্ত জায়গা:
-
প্রতি মুরগির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নিশ্চিত করুন।
-
বায়ুচলাচল:
-
খাঁচায় সঠিক বায়ুচলাচল এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন (২০-২৫°C)।
৫. মুরগির সঠিক জাত নির্বাচন
-
ডিম পাড়ার জন্য সেরা জাতের মুরগি নির্বাচন করুন, যেমন লেয়ার জাত।
-
উন্নত জাতের মুরগি দ্রুত ডিম পাড়ে এবং উৎপাদন দীর্ঘস্থায়ী হয়।
৬. মানসিক চাপ কমানো
-
মুরগির চারপাশে শব্দদূষণ কমাতে হবে।
-
সঠিক খাদ্য ও আলো না পেলে মুরগির মানসিক চাপ বাড়ে, যা ডিম উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে।
৭. ডিম পাড়ার সময় পর্যবেক্ষণ
-
ডিম পাড়ার সময়ে মুরগির স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করুন।
-
নিয়মিত খাঁচা বা ঘর থেকে ডিম সংগ্রহ করুন।
৮. সঠিক বয়সে মুরগি পালন শুরু
-
মুরগি সাধারণত ১৮-২০ সপ্তাহ বয়সে ডিম পাড়া শুরু করে।
-
সঠিক বয়সে লেয়ার জাতের মুরগি পালন শুরু করলে ডিম উৎপাদন বেশি হবে।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে মুরগির ডিম উৎপাদনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো সম্ভব।