ক্লাউড কম্পিউটিং কী?
ইন্টারনেটে একের অধিক ভার্চুয়াল সার্ভার নিয়ে গঠিত নেটওয়ার্ককে ক্লাউড কম্পিউটিং বলে। এখানে ক্লাউড শব্দটি স্টোরেজ এর রুপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ ক্লাউড কম্পিউটিংকে আমরা ভার্চুয়াল ডাটা স্টোরেজ সিস্টেমের সাথে তুলনা করতে পারি। যখন একের অধিক ভার্চুয়াল সার্ভার গুলোকে একটির সাথে আরেকটি ইন্টারনেট দ্বারা সংযুক্ত করে তার ফাঁকা স্পেস ইউজারদের ডাটা স্টোর করার জন্য ভাড়া দেওয়া হয় তখন তাকে ক্লাউড কম্পিউটিং বলে। এটি একটি ইউনিক্স নির্ভর টেকনোলজি যেখানে একটি অপারেটিং সিস্টেম, APIs, ভার্চুয়ালাইজেশন, অটোমেশন এবং ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার থাকে।
পূর্বে কোনো অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে চাইলে আমাদের প্রয়োজন হতো হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের। তাছাড়া অ্যাপের ফাইল রাখার জন্য ফিজিক্যাল সার্ভার পরিচালনার প্রয়োজন হতো। এসব পরিচালনা করার জন্য যেমন অতিরিক্ত লোক লাগত তেমনি খরচ বেড়ে যেত।
কিন্তু ক্লাউড কম্পিউটিং এ আপনি Pay-As-You-Go সিস্টেমে অর্থাৎ যত টুকু রিসোর্স ব্যবহার করবেন শুধু তার খরচ দিতে হবে। এতে যেমন আপনাকে দামি হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কিনতে হবে না তেমনি অতিরিক্ত লোক নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
ক্লাউড কম্পিউটিং আপাত অর্থে একটি কম্পিউটার যা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ডাটা সেন্টারে হাজার হাজার সার্ভারের সাথে সংযুক্ত। অর্থাৎ আপনি সার্ভিস নেওয়ার সময় কত টুকু স্পেস, প্রোসেসিং পাওয়ার, হার্ডওয়্যার সাপোর্ট ইত্যাদি নির্ধারণ করে নিতে পারবেন। এতে আপনি আপনার ঘরে বসে ভার্চুয়ালভাবে লেটেস্ট হার্ডওয়্যারের কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারবেন যার কোন কিছুতেই আপনার ফিজিক্যাল খরচ করতে হবে না। আপনার ভাড়া নেওয়া সার্ভিসে কোনো হার্ডওয়্যার সমস্যা দেখা দিলে তা সার্ভিস প্রোভাইডার আপনার থেকে অতিরিক্ত খরচ না নিয়েই রিপ্লেস করে দিবে।
মোটকথা, পারফর্মেন্সের উপর নির্ভর করে এই সার্ভিসকে তিন ভাবে ভাগ করা হয় যেমন SaaS, LaaS, PaaS সার্ভিস। প্রতিটি সার্ভিস আলাদা আলাদা উদ্দেশ্য সম্পন্ন করে। সর্বোপরি ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভার, স্টোরেজ, ডাটাবেজ, অ্যাপ্লিকেশান হোস্টিং, ভার্চুয়াল কম্পিউটার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তৈরি।
ক্লাউড কম্পিউটিং কত প্রকার?
প্রধানত ক্লাউড কম্পিউটিং চার প্রকার। নিচে তা বর্ণনা করা হলো।
পাবলিক
পাবলিক ক্লাউড হলো এমন একটি সার্ভিস যা কোন নির্দিষ্ট গ্রুপ বা ইউজারের ব্যবহারের জন্য নয়। এগুলো পরিচালিত হয় ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডারদের নির্দিষ্ট ডাটাসেন্টার থেকে। বর্তমানে সব থেকে বেশি পরিচিত পাবলিক ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডারের মধ্যে গুগল ক্লাউড, আলিবাবা ক্লাউড, আইবিএম ক্লাউড, AWS (অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস) এবং Microsoft Azure অন্যতম।
প্রাইভেট
প্রাইভেট ক্লাউড সার্ভিস একটি নির্দিষ্ট গ্রুপ বা ইউজারের জন্য তৈরি করা থাকে। এই ধরনের সার্ভিস প্রোভাইড করার জন্য প্রোভাইডার ডাটা সেন্টারে সার্ভার ভাড়া করে সেখানে পাবলিক ক্লাউডের বাইরে একটি প্রাইভেট ক্লাউড তৈরি করে।
হাইব্রিড
সকল ধরনের পাবলিক এবং প্রাইভেট ক্লাউড সার্ভিস নেটওয়ার্ক সিস্টেম ইউজ করে একই সাথে কানেক্টেড থাকা কে হাইব্রিড ক্লাউড সিস্টেম বলে। অর্থাৎ অনেকগুলো ক্লাউড সার্ভিস যখন একই নেটওয়ার্কে থাকে কিন্তু আলাদা আলাদা হিসেবে কাজ করে তখন তাকে হাইব্রিড ক্লাউড বলে।