SSL (সিকিউর সকেটস লেয়ার) এবং TLS (ট্রান্সপোর্ট লেয়ার সিকিউরিটি) হল এমন প্রোটোকল যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগকে নিরাপদ করে। SSL এর উন্নত সংস্করণ হল TLS। এই দুটি প্রোটোকল মূলত ডেটা এনক্রিপশন, অথেনটিকেশন এবং ডেটা ইন্টিগ্রিটি নিশ্চিত করে অনলাইন যোগাযোগকে সুরক্ষিত করে। নিচে SSL/TLS এনক্রিপশন কিভাবে কাজ করে এবং কিভাবে এটি যোগাযোগ নিরাপদ করে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. এনক্রিপশন (Encryption):
SSL/TLS এনক্রিপশনের মূল কাজ হল ডেটাকে এমন একটি কোডে পরিবর্তন করা যা শুধুমাত্র প্রেরক এবং প্রাপকই বুঝতে পারে। যখন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে আপনার তথ্য (যেমন - ক্রেডিট কার্ড নম্বর, পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত তথ্য) পাঠান, তখন SSL/TLS সেই তথ্যকে এনক্রিপ্ট করে দেয়। এর ফলে যদি কোনো হ্যাকার সেই ডেটা ইন্টারসেপ্ট করে, তাহলেও তারা এনক্রিপ্টেড কোড ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। এই এনক্রিপশন দুই ধরনের কী ব্যবহার করে:
* পাবলিক কী (Public Key): এটি সার্ভার থেকে ক্লায়েন্টের কাছে পাঠানো হয় এবং ডেটা এনক্রিপ্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
* প্রাইভেট কী (Private Key): এটি শুধুমাত্র সার্ভারের কাছে থাকে এবং এনক্রিপ্টেড ডেটা ডিক্রিপ্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই পদ্ধতিকে অ্যাসিমেট্রিক এনক্রিপশন বলা হয়।
২. অথেনটিকেশন (Authentication):
SSL/TLS সার্টিফিকেট একটি ওয়েবসাইটের পরিচয় নিশ্চিত করে। যখন কোনো ওয়েবসাইট SSL/TLS সার্টিফিকেট ব্যবহার করে, তখন একটি বিশ্বস্ত সার্টিফিকেট অথরিটি (CA) সেই ওয়েবসাইটের সত্যতা যাচাই করে। এর ফলে ব্যবহারকারীরা নিশ্চিত হতে পারে যে তারা সঠিক ওয়েবসাইটের সাথে যোগাযোগ করছে এবং কোনো ফিশিং বা নকল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করছে না।
৩. ডেটা ইন্টিগ্রিটি (Data Integrity):
SSL/TLS নিশ্চিত করে যে প্রেরিত ডেটা পথে কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। এটি "মেসেজ অথেনটিকেশন কোড" (MAC) ব্যবহার করে, যা ডেটার সাথে যুক্ত থাকে এবং ডেটা পরিবর্তনের চেষ্টা করা হলে তা শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
SSL/TLS কিভাবে কাজ করে তার একটি সাধারণ চিত্র:
* ব্যবহারকারী যখন কোনো HTTPS ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে, তখন ব্রাউজার সার্ভারের কাছে একটি সংযোগের অনুরোধ পাঠায়।
* সার্ভার তার SSL/TLS সার্টিফিকেট এবং পাবলিক কী ব্রাউজারের কাছে পাঠায়।
* ব্রাউজার সার্টিফিকেটটি যাচাই করে এবং সার্ভারের পাবলিক কী ব্যবহার করে একটি সিমেট্রিক কী তৈরি করে।
* ব্রাউজার সেই সিমেট্রিক কী সার্ভারের পাবলিক কী দিয়ে এনক্রিপ্ট করে সার্ভারের কাছে পাঠায়।
* সার্ভার তার প্রাইভেট কী ব্যবহার করে সিমেট্রিক কী ডিক্রিপ্ট করে।
* এখন সার্ভার এবং ব্রাউজার উভয়ই সেই সিমেট্রিক কী ব্যবহার করে তাদের মধ্যে সমস্ত যোগাযোগ এনক্রিপ্ট করে।
এইভাবে SSL/TLS এনক্রিপশন ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ নিরাপদ করে তোলে। এর ফলে ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষিত থাকে এবং অনলাইন কার্য
ক্রম নিরাপদ হয়।