রোজাদারের জন্য এমন খাবার নির্বাচন করা উচিত যা সহজে হজম হয়, পুষ্টিকর, এবং এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। রোজার সময় দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে পেট খালি থাকে, যা এসিডিটির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। নিচে স্বাস্থ্যকর খাবার ও কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হলো:
ইফতারে খাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার:
১. খেজুর:
-
খেজুর প্রাকৃতিক চিনি, ফাইবার, ও খনিজ সমৃদ্ধ। এটি দ্রুত শক্তি প্রদান করে এবং পেটে সহজে সহ্য হয়।
২. পানি ও ডাবের পানি:
-
ইফতার শুরুতে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। ডাবের পানি পেটে এসিড কমাতে সাহায্য করে।
৩. ফল:
-
তরমুজ, কমলা, পেঁপে, বা কলার মতো ফল পেটে সহজে হজম হয় এবং এসিড কমায়।
-
লেবুর শরবত (চিনি কম দিয়ে) পান করলে হাইড্রেশন বজায় থাকে এবং এসিডিটি দূর হয়।
৪. শাকসবজি:
-
শসা, গাজর, ব্রকলির মতো শাকসবজি সহজে হজম হয় এবং পেটের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
৫. চিড়া বা দই চিড়া:
-
চিড়া হালকা এবং সহজে হজম হয়। এর সঙ্গে দই মিশিয়ে খেলে পেটে আরাম হয় এবং এসিডিটি কমে।
৬. বাদাম:
-
ভেজানো বাদাম বা কাঠবাদাম খেলে পেটের অম্লতা কমে এবং প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ হয়।
সেহরিতে খাওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার:
১. জটিল কার্বোহাইড্রেট:
-
লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি, বা ওটমিল দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি সরবরাহ করে এবং এসিডিটির সমস্যা কমায়।
২. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার:
-
ডিম (সেদ্ধ বা ভাজি), চিকেন, বা মাছ সেহরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এটি দীর্ঘ সময় তৃপ্তি দেয়।
৩. দই বা লাচ্ছি:
-
দই পেটে ঠান্ডা ভাব এনে দেয় এবং হজমে সহায়তা করে।
৪. সবজি:
-
পটল, শাক, বা লাউয়ের মতো সবজি সেহরিতে খেলে পেট হালকা থাকে এবং এসিডিটি কম হয়।
৫. ফল:
-
কলা বা আপেল খেলে পেটে আরাম হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে এনার্জি বজায় থাকে।
এসিডিটি এড়ানোর জন্য এড়িয়ে চলুন:
১. তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার:
-
পাকোড়া, সমুচা, চপ বা অতিরিক্ত ভাজা খাবার এসিডিটি বাড়ায়।
২. ক্যাফেইন:
-
চা বা কফি পেটের অম্লতা বাড়াতে পারে।
৩. অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার:
-
ঝাল ও মসলাদার খাবার এসিডিটি বাড়ায়।
৪. ফাস্ট ফুড:
-
বার্গার, পিৎজা বা অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
৫. কার্বোনেটেড পানীয়:
-
কোমল পানীয় বা সোডা পান করা থেকে বিরত থাকুন। এটি এসিডিটি বাড়ায়।
অতিরিক্ত টিপস:
-
ধীরে ধীরে খাওয়া: দ্রুত খাবার খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
-
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: ইফতার থেকে সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
-
অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন: একবারে বেশি না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে খান।
-
পর্যাপ্ত ঘুম: রোজার সময় শরীর সুস্থ রাখতে ঘুম গুরুত্বপূর্ণ।
এসব অভ্যাস ও খাবারের পরিকল্পনা অনুসরণ করলে রোজার সময় এসিডিটির সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে।