হজ্জ শব্দের আভিধানিক অর্থ হল ইচ্ছে করা, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরআন ও হাদিসের নিয়ম মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ এবং নির্দিষ্ট স্থান সমূহে তাওয়াফ ও জিয়ারত করাকে ইসলামের পরিভাষায় হজ্জ বলা হয়।
৫ম হিজরীতে মদীনায় হজ্জ ফরজ হয়।
সংক্ষেপে হজ্জের বিধাবাবলীঃ-
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্ত ৬ টিঃ-
১/ মুসলমান হওয়া,
২/ জ্ঞানী হওয়া,
৩/ স্বাধীন হওয়া,
৪/ বালেগ তথা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া,
৫/ সামর্থবান হওয়া অর্থাৎ হজ্জ কর্ম সম্পাদন করতে স্বাভাবিক পর্যায় খরচ বহনে সক্ষম হওয়া।
সামর্থ্যবান যেভাবে বিচেচিত হবেঃ-
নিজের দেশ বা ভূমি থেকে মক্কায় গিয়ে— আবার ফিরে আসা পর্যন্ত সামর্থ্য থাকলে, হজ ফরজ হয়। কেউ যদি সম্পদ অথবা স্থাবর সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রি করে হজে যায়; আবার হজ থেকে ফিরে এসে— বাকি সম্পত্তি দিয়ে জীবন নির্বাহ করতে পারে, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ হয়। (ইমদাদুল আহকাম : ২/১৫২; আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৫১৬)
হজ্জ আদায় করা ওয়াজিব হওয়ার শর্ত ৫ টিঃ-
১/ সুস্থ হওয়া,
২/ বাঁধা নিষেধ না থাকা,
৩/ রাস্তা নিরাপদ হওয়া,
৪/ মহিলাদের ইদ্দতের সময় না হওয়া,
৫/ মাহরামের সাথে যাওয়া।
হজ্জের ফরজ ৩টিঃ-
১/ ইহরাম বাঁধা,
২/ আরাফার ময়দানে অবস্থান করা,
৩/ তাওয়াফে যিয়ারত করা ।
হজ্জের ওয়াজিব ৬ টিঃ-
১/ মীনায় অবস্থান করা,
২/ মুজদালিফায় রাত্রী যাপন করা,
৩/ মিনায় শয়তানের উপর পাথর মারা ও মাথা মুন্ডন,
৪/ কোরবানী করা,
৫/ সায়ী/ দৌড়নো এবং
৬/ বিদায় তাওয়াফ করা ।
কাদের উপর হজ্জ ফরযঃ-
যার নিকট মক্কা শরীফ থেকে হজ্জ করে ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারের আবশ্যকীয় খরচ বাদে মক্কা শরীফ যাতায়াতের মোটামুটি খরচ পরিমাণ অর্থ থাকে তার উপর হজ্জ ফরয । ব্যবসায়িক পণ্য এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমির মূল্য এ অর্থের হিসেবে গণ্য করতে হবে । মেয়েলোকদের জন্য নিজ স্বামী বা নিজের কোন বিশ্বস্ত দ্বীনদার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত হজ্জে যাওয়া দুরস্ত নয় । শুধু এমন কোন কোন মহিলা থাকা যথেষ্ট নয় , যার সাথে তার মাহরাম পুরুষ রয়েছে । অন্ধের উপর হজ্জ ফরয নয় যত ধনই থাকুক না কেন ? নাবালেগের উপর হজ্জ হয় না । নাবালেগ অবস্থায় হজ্জ করলেও বালেগ হওয়ার পর সম্বল হলে পুনরায় হজ্জ করতে হবে ।
হজ্জের ফজিলতঃ- নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রেযামন্দী ও সন্তুষ্টির জন্য হজ্জ করবে, সে ব্যক্তি সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের ন্যায় পাপমুক্ত অবস্থায় বাড়ী ফিরবে। সুবহানাল্লাহ্।