ভুলবশত কিংবা অন্য কোনো বিশেষ কারণে কোনো ওয়াক্তের নামায আদায় করতে না পারলে এই নামায পরবর্তীতে আদায় করাকে কাযা নামায বলা হয়।
ফরজ কিংবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে তার কাযা আদায় করা আবশ্যক। সুন্নত কিংবা নফল নামাযের কাযা আদায় করতে হয় না।
কারো যদি দিনের একাধিক সালাত কাযা হয়ে যায় তবে তার বিধান হচ্ছেঃ
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, মুশরিকরা খন্দক যুদ্ধের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চার ওয়াক্ত সালাত আদায়ে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এমনকি রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হয়ে যায় কিন্তু তিনি সালাত আদায় করতে পারলেন না। পরে তিনি বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু কে আযান দিতে বললেন। বিলাল রাদিয়াল্লাহু আনহ আযান দিয়ে ইকামত দিলেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত আদায় করলেন।
পরে আবার তিনি ইকামত দিলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত আদায় করলেন।
পরে তিনি আবার ইকামত দিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের সালাত আদায় করলেন এরপর তিনি পুনরায় ইকামত দিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশার সালাত আদায় করলেন।
(সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ২/ সালাত, হাদিস নম্বরঃ ১৭৯ হাদিসের মানঃ হাসান)।
কাযা সালাতের বিষয়ে আলিমগণ এই মতটই গ্রহণ করেছেন যে, কাযার সময় প্রতেক সালাতের জন্য ইকামত দেওয়া যায়। ইকামত না দিলেও তা হয়ে যাবে। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) এর অভিমতও এই।
কারো যদি মাস বা বছরের একাধিক সালাত কাযা হয়ে যায় তবে তার বিধান হচ্ছেঃ
কাযা নামায আদায় করার সময় এ নিয়ত করতে হবে আমি অমুক দিনের অমুক ওয়াক্তের নামায কাযা আদায় করছি। আর যদি দিন-তারিখ মনে না থাকে, এমতাবস্থায় এভাবে নিয়ত করতে হবে আমি আমার জীবনের সর্বপ্রথম জোহর নামাযের কাযা আদায় করছি।
এভাবে প্রত্যেক ওয়াক্ত কাযা নামায আদায় করার সময় নিয়ত করতে হবে। আর ততদিন পর্যন্ত কাযা নামায আদায় করতে থাকবে, যতক্ষণ না ওই ব্যক্তির মন এ সাক্ষ্য দেবে যে, তার জিম্মায় কোনো নামায কাযা নেই।
কাজা নামায আদায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো প্রত্যেক নামাযের সময় একাধিক ওয়াক্তের কাযা আদায় করে নেয়া।
অতএবঃ জীবনে যে নামায পড়ে নাই বা কত ওয়াক্ত নামায কাযা হয়েছে তার হিসাবও নাই। সে ব্যক্তি যদি এখন সব নামাযের কাযা আদায় করতে চায়; তবে সে ব্যক্তি প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের সঙ্গে সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের কাযা আদায় করতে থাকবে। এভাবে নামায আদায়কে ‘ওমরি কাযা’ বলে।
এর আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে সে আল্লাহর কাছে খালেদ মনে তাওবা করবে এবং প্রতিজ্ঞা করবে যে এর পর থেকে এক ওয়াক্ত নামাজও আর কাজা করবে না।