220 বার দেখা হয়েছে
"কুরআন ও হাদিস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
লুকমান হাকিম পেশাগত দিক থেকে ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি। সামান্য আয়ের মানুষ হলেও তিনি কখনো অর্থের জন্য অনৈতিক কাজে জড়াননি। সৎভাবে অর্জিত অর্থ দিয়েই তিনি জীবন চালাতেন। লোকমান হাকিমকে একলোক এসে বলে, তুমি ওই ব্যক্তি না, যে আমার সঙ্গে মাঠে ছাগল চড়িয়েছ? আচ্ছ বলো তো, তুমি এত বড় হলে কীভাবে, লোকজন দূরদূরান্ত থেকে তোমার কথা শুনার জন্য আসে এবং তোমার এত বড়বড় মজলিস বসে? উত্তরে তিনি দুটি গুণের কথা বলেন। দুটি গুণের কারণেই আল্লাহ তায়ালা তাকে এত বড় করেছেন। (এক) সদা সত্য কথা বলা। (দুই) অনর্থক কথা বলা থেকে বিরত থাকা।

কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, লোকমান হাকিম বলেছেন, যে গুণগুলোর কারণে আল্লাহ তায়ালা আমাকে এত ওপরে উঠিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি যদি সেগুলো অর্জন করতে পারেন তাহলে সেও আমার মতো মর্যাদার আসনে সমাসিন হতে পারবেন। সে গুণগুলো হচ্ছে, নিজের দৃষ্টিকে নিচের দিকে রাখা, জবানকে বন্ধ রাখা তথা চুপ থাকা, হালাল আয়ের ওপর সন্তুষ্ট থাকা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, সত্য কথা বলা, অঙ্গিকার পূর্ণ করা, মেহমানের ইজ্জত করা, প্রতিবেশিকে কষ্ট না দেয়া, অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করা।

তাফসিরে মাআরেফুল কুুরআনে ইবনে কাসিরের সনদে এই কথাগুলো লেখা আছে। সাহাবি আবু দারদা (রা.) এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি ছিলেন নিরবতা অবলম্বণকারী, সর্বদা চিন্তায় নিমগ্ন ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন ব্যক্তি। দিনে কখনো ঘুমাতেন না। কেউ তাকে থুথু ফেলা, নাক পরিস্কার ইত্যাদি মানবিয় কাজ করতে দেখেননি (অর্থাৎ এগুলো তিনি নিরবে সেরে ফেলতেন)। (ইবনে কাসির) আজ আমাদের মাঝে এই গুণগুলোর অনুসন্ধান চালালে দেখা যাবে অধিকাংশই অনুপস্থিত। আমরা অনেকেই সন্তানকে বড় ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলতে চাই। বড় হতে এই গুণগুলোর বিকল্প নেই। 

লুকমান হাকিম নবী ছিলেন কিনা সে ব্যাপারে মতানৈক্য পরিলক্ষিত হয়। ইবনে কাসির (রাহ.) এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নবী ছিলেন না। হজরত ইকরিমা (রা.) থেকে এক বর্ণনা পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়েছে তিনি নবী ছিলেন। কিন্তু মুফাস্সিরগণ ওই বর্ণনাকে দুর্বল বলেছেন। তিনি হজরত আইউব (আ.) এর আত্মীয় ছিলেন। কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে তিনি আইউব (আ.) এর খালাত ভাই ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে অনেক লম্বা জীবন দান করেছিলেন। হজরত দাউদ (আ.) এর যুগ পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন। তিনি নবী হওয়ার ব্যাপারে মতানৈক্য থাকলেও আল্লাহ তায়ালার বিশেষ বান্দা হওয়ার ব্যাপারে কারো কোনো ভিন্নমত নেই। হজরত লোকমান (আ.) সকলের কাছে হাকিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন। হাকিম মানে হচ্ছে যার থেকে প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা বের হয়। তার কথা ছিল অর্থবহ। মানুষের মাঝে এর প্রভাব ছিল ব্যাপক। এখনো মানুষ তার কথাকে বাণী হিসেবে লিখে রাখে। তার কৃতিত্বের জন্য এতটুকুই যথেষ্ঠ যে, আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তার কথাকে কোরআনে মানুষের নসিহত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এবং আল কোরআনের একটি সূরার নাম রাখা হয়েছে লুকমান।

হজরত কাতাদা (রাহ.) থেকে লুকমান (আ.) সম্পর্কে একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা হজরত লুকমান হাকিমকে দুটি বিষয়ের যে কোনো একটি গ্রহণের এখতিয়ার দিয়েছিলেন। বিষয় দুটি হচ্ছে নবুওয়াত ও হেকমত। হজরত লুকমান (আ.) হেকমতকে কবুল করেন, নবুওয়াতকে গ্রহণ করেননি। কেউ একজন তাকে এর কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ‘যদি আমাকে নবুওয়াত দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হত; তাহলে আমি তা গ্রহণ করলে আল্লাহর সাহায্য পেয়ে তাতে সফল হতাম। কিন্তু তা চূড়ান্ত না করে ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে, যে কারণে এ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে আমি শঙ্কিত ছিলাম। তাই আমি হেকমতকে অগ্রাধিকার দিয়ে তা গ্রহণ করেছি।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

2 টি উত্তর
6 মে, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন তানহা
1 টি উত্তর
6 মে, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন তানহা
0 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
23 ফেব্রুয়ারি, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন তানহা
1 টি উত্তর
1 জানুয়ারি, 2023 "নামের অর্থ" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Mdshakinur
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
15 ফেব্রুয়ারি, 2022 "জীবনী" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর

34,058 টি প্রশ্ন

33,008 টি উত্তর

1,579 টি মন্তব্য

3,214 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
9 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 9 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 14447
গতকাল ভিজিট : 28812
সর্বমোট ভিজিট : 42852312
  1. Tuhin_Islam

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  2. Sijan855

    1 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    1 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...