ক্রোমাটোগ্রাফি হলো একটি বিশ্লেষণী পদ্ধতি যা মিশ্রণকে এর উপাদানে বিভক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এটি স্থির এবং সচল দুটি মাধ্যমের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। স্থির মাধ্যম হলো একটি অণুবীক্ষণিক স্তর যাতে মিশ্রণের উপাদানগুলো শোষিত হয়। সচল মাধ্যম হলো একটি তরল বা গ্যাস যা স্থির মাধ্যমের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। মিশ্রণের উপাদানগুলোর স্থির এবং সচল মাধ্যমের সাথে মিথস্ক্রিয়া করার হারের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে এরা স্থির মাধ্যমের বিভিন্ন স্তরে পৃথক হয়।
ক্রোমাটোগ্রাফির বিভিন্ন প্রকার রয়েছে, যেমন:
-
কলাম ক্রোমাটোগ্রাফি: এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরণের ক্রোমাটোগ্রাফি। এক্ষেত্রে মিশ্রণকে একটি কলামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। কলামটি স্থির মাধ্যমে ভরা থাকে।
-
প্লেট ক্রোমাটোগ্রাফি: এক্ষেত্রে মিশ্রণকে একটি প্লেটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। প্লেটটি স্থির মাধ্যমে ভরা থাকে।
-
কগেট ক্রোমাটোগ্রাফি: এক্ষেত্রে মিশ্রণকে একটি কগেটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। কগেটটি স্থির মাধ্যমে ভরা থাকে।
-
পাতলা স্তর ক্রোমাটোগ্রাফি (TLC): এক্ষেত্রে মিশ্রণকে একটি পাতলা স্তর স্থির মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থির স্তরের উপর দিয়ে একটি সচল মাধ্যম প্রবাহিত করা হয়।
-
গাস ক্রোমাটোগ্রাফি (GC): এক্ষেত্রে মিশ্রণকে একটি গরমের নল দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। নলটিতে একটি স্থির মাধ্যম ভরা থাকে।
-
তরল ক্রোমাটোগ্রাফি (LC): এক্ষেত্রে মিশ্রণকে একটি তরল মাধ্যমে প্রবাহিত করা হয়। তরল মাধ্যমে একটি স্থির মাধ্যম ভরা থাকে।
ক্রোমাটোগ্রাফি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
-
বিশ্লেষণ: মিশ্রণের উপাদানগুলোকে চিহ্নিত এবং পরিমাণগতভাবে নির্ধারণ করতে।
-
শুদ্ধকরণ: মিশ্রণ থেকে নির্দিষ্ট উপাদান পৃথক করতে।
-
নিয়ন্ত্রণ: পণ্যের গুণমান নিয়ন্ত্রণ করতে।
ক্রোমাটোগ্রাফি একটি শক্তিশালী বিশ্লেষণী পদ্ধতি যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি মিশ্রণকে এর উপাদানে বিভক্ত করতে এবং নির্দিষ্ট উপাদান শনাক্ত এবং পরিমাণগতভাবে নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।