ইলমে কালাম হল ইসলামী দর্শনের একটি শাখা যা আল্লাহ, রাসুল, কুরআন, ঈমান, আখিরাত ইত্যাদি বিষয়ে যুক্তিভিত্তিক আলোচনা করে। ইলমে কালামের আলোচিত বিষয় সমূহ নিম্নরূপ:
-
আল্লাহর অস্তিত্ব ও গুণাবলী: আল্লাহর অস্তিত্ব প্রমাণ করা, তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করা এবং তাঁর সাথে শিরক ও কুফরের অপকারিতা আলোচনা করা।
-
রাসুলের নবুওয়াত: রাসুলের নবুওয়াত প্রমাণ করা, তাঁর মর্যাদা ও গুণাবলী বর্ণনা করা এবং তাঁর মিথ্যাবাদী হওয়ার অসম্ভবতা আলোচনা করা।
-
কুরআনের অহী: কুরআনের অহীর প্রমাণ করা, এর মর্যাদা ও গুণাবলী বর্ণনা করা এবং এর বিকৃতি অসম্ভবতা আলোচনা করা।
-
ঈমানের মূলনীতি: ঈমানের ছয়টি মূলনীতির বিস্তারিত আলোচনা করা।
-
আখিরাত: আখিরাতের অস্তিত্ব প্রমাণ করা, এর বিভিন্ন অবস্থা বর্ণনা করা এবং এর জন্য প্রস্তুতির গুরুত্ব আলোচনা করা।
ইলমে কালামের আলোচিত বিষয়গুলিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
-
তাওহীদ: আল্লাহর একত্বের বিষয়ে আলোচনা করা।
-
আখলাক: নৈতিকতার বিষয়ে আলোচনা করা।
ইলমে কালামের উদ্দেশ্য হল ইসলামী বিশ্বাসকে যুক্তিভিত্তিকভাবে প্রমাণ করা এবং এর বিরুদ্ধে আপত্তিগুলি খণ্ডন করা। এটি মুসলমানদেরকে তাদের বিশ্বাসের উপর দৃঢ় থাকার এবং ইসলামের বিরুদ্ধে আক্রমণগুলির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
ইলমে কালামের ইতিহাস খুবই প্রাচীন। ইসলামের প্রথম শতাব্দীতে এটি একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। নবীর যুগেই মুসলমানরা তাদের বিশ্বাসকে যুক্তিভিত্তিকভাবে প্রমাণ করার জন্য যুক্তি ও দলিল ব্যবহার করত। তবে ইলমে কালামের বিকাশ মূলত হয়েছিল ৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে। এই সময়ে আল-ফারাবী, ইবনে সিনা, ইবনে রুশদ, ইমাম গাজ্জালি প্রমুখ ইসলামী দার্শনিকগণ ইলমে কালামের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।
আজকাল ইলমে কালাম একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী বিষয়। এটি মুসলমানদেরকে তাদের বিশ্বাসকে মজবুত করতে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে আক্রমণগুলির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।