127 বার দেখা হয়েছে
"ইসলামের ইতিহাস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন

হযরত খাব্বাব (রাযিঃ) ছিলেন সেই সকল সৌভাগ্যবান লোকদের অন্যতম যাঁরা স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে পরীক্ষার সম্মুখীন করেছিলেন। তিনি আল্লাহর রাস্তায় কঠিন থেকে কঠিনতর দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছেন। শুরুতেই পাঁচ ছয়জনের পর তিনি মুসলমান হয়ে গিয়েছিলেন। এজন্য দীর্ঘদিন পর্যন্ত তিনি নির্যাতন ভোগ করেছেন। লোহার পোশাক পড়িয়ে তাঁকে প্রচণ্ড রৌদ্রে ফেলে রাখা হতো। যার ফলে গরম আর প্রচণ্ড তাপে ঘামের পর ঘাম বের হতে থাকত। অধিকাংশ সময় উত্তপ্ত বালুর উপর শুইয়ে রাখা হতো। ফলে কোমরের গোশত পর্যন্ত গলে খসে পড়ে গিয়েছিল। তিনি একজন মহিলার গোলাম ছিলেন। মহিলা সংবাদ পেলো যে, এই ব্যক্তি ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট যাওয়া-আসা করে। এর শাস্তিস্বরূপ সে লোহা গরম করে তাঁর মাথায় দাগ দিত। এভাবেই গিয়েছে হজরত খাব্বাব বিন আরাত রাযিয়াল্লাহু আনহুর নির্যাতন ভোগের দিনগুলো। 

দীর্ঘদিন পর একবার হযরত ওমর (রাযিঃ) তাঁর খেলাফতের যমানায় হযরত খাব্বাব (রাযিঃ) এর নিকট তাঁর নির্যাতন ভোগের বিস্তারিত ঘটনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি আরজ করলেন যে, হে আমীরুল মু'মিনীন!  আপনি আমার কোমর দেখুন। হযরত ওমর (রাযিঃ) তাঁর কোমর দেখে বললে, এমন কোমর তো কারোই কখনও দেখি নি। হযরত খাব্বাব (রাযিঃ) আরজ করলেন, প্রজ্জ্বলিত কয়লার উপর আমাকে শোয়াইয়া টানা-হেঁচড়া করা হয়েছে। আমার কোমরের চর্বি ও রক্ত দ্বারা ঐ আগুন নিভে গিয়েছে। 

এই অবস্থার পরও যখন ইসলামের উন্নতি হলো এবং সচ্ছলতা এলো, তখন এর জন্য তিনি ক্রন্দন করতেন যে, খোদা না করুন আমাদের দুঃখ-কষ্টের বদলা দুনিয়াতেই পেয়ে গেলাম নাতো! 

হযরত খাব্বার (রাযিঃ) বলেন, একদিন হুযুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর অভ্যাসের খেলাফ খুব দীর্ঘ নামায পড়লেন। সাহাবায়ে কেরাম (রাযিঃ) জিজ্ঞাসা করলে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটা ছিল আশা ও ভয়ের নামায। আমি এই নামাযের মধ্যে আল্লাহ তা'য়ালার নিকট তিনটি বিষয়ে দোয়া করেছিলাম। তন্মধ্যে দু'টি কবুল হয়েছে আর একটি কবুল হয় নি। আমি এই দোয়া করেছি যে, দুর্ভিক্ষের কারণে আমার সমস্ত উম্মত যেন ধ্বংস না হয়ে যায়। এই দোয়া কবুল হয়েছে। দ্বিতীয় এই দোয়া করেছি যে, তাদের উপর এমন কোন দুশমন যেন ক্ষমতা লাভ না করে, যে তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়। এই দোয়াও কবুল হয়েছে। তৃতীয় এই দোয়া করেছি যে, তাদের মধ্যে পরস্পর যেন ঝগড়া-বিবাদ না হয়। এই শেষোক্ত দোয়াটি কবুল হয় নি।

হযরত খাব্বাব (রাযিঃ) সাঁয়ত্রিশ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন এবং তিনিই সর্বপ্রথম সাহাবী, যিনি কুফায় দাফন হয়েছেন। ইন্তেকালের পর হযরত আলী (রাযিঃ) একদিন  তাঁর কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, আল্লাহ তায়ালা খাব্বাব (রাযিঃ) এর উপর রহম করুন। তিনি নিজের আগ্রহে মুসলমান হয়েছেন, নিজের খুশীতে হিজরত করেছেন এবং আজীবন জিহাদে কাটিয়ে দিয়েছেন। বহু দুঃখ, কষ্ট ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। ভাগ্যবান ঐ ব্যক্তি যে কিয়ামতকে স্মরণ রাখে এবং হিসাব-নিকাশের প্রস্তুতি নেয়, জীবিকার উপযোগী সম্পদের উপর সন্তুষ্ট থাকে এবং আপন মাওলাকে রাজী করিয়া নেয়। 

(উসদুল গাবাহ)

শিক্ষাঃ- বাস্তবিকই মাওলাকে রাজী করা এই সকল সৌভাগ্যবান লোকের পক্ষেই সম্ভব ছিল। কেননা তাঁদের জীবনের প্রতিটি কাজই ছিল মাওলা পাকের সন্তুষ্টির জন্য।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

34,064 টি প্রশ্ন

33,010 টি উত্তর

1,579 টি মন্তব্য

3,222 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
13 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 13 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 14480
গতকাল ভিজিট : 36095
সর্বমোট ভিজিট : 43017323
  1. Towhid-khan

    55 পয়েন্ট

    1 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  2. Sorwar201277

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  3. Farhana

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  4. Rifa_Moni

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  5. Tumpa_Moni

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...