কাপড়ে অপবিত্র জিনিস লেগে উক্ত কাপড়কে অপবিত্র করে ফেলে। যাকে আরবীতে নাজাসত বলে। নাজাসত দুই প্রকার:
ক)নাজাসাতে গালিজাহ
খ)নাজাসাতে খাফিফাহ
প্রথম প্রকারঃ নাজাসতে গালিজাহ যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে, ِﻥﺎَﻋْﻮَﻧ َﻲِﻫَﻭ)ُﻝَّﻭَﺄْﻟﺍ(َﻲِﻔُﻋَﻭ ُﺔَﻈَّﻠَﻐُﻤْﻟﺍ ِﻢَﻫْﺭِّﺪﻟﺍ ُﺭْﺪَﻗ ﺎَﻬْﻨِﻣ নাজসতে গালিজাহ যা এক দিরহাম পরিমাণ হলে ক্ষমাযোগ্য।
নাজাসতে গালিজাহ কি কি?
সে সম্পর্কে বলা হয়, ঐ সমস্ত জিনিস যা মানুষের শরীর থেকে বের হয়ে ওজু গোসলকে ওয়াজিব করে দেয়।তা হল নাজাসতে গালিজাহ,যেমনঃ- পায়খানা,পেশাব,বীর্য, মযি(বীর্যের পূর্বে যা বাহির হয়),ওদি(প্রস্রাবের সময় যা বাহির হয়) পুজ ,বমি যখন তা মুখভরে হয়, (বাহরুর রায়েক) এবং আরো ও নাজাসতে গালিজাহ হল যথাক্রমে- হায়েয ও নেফাসের রক্ত,ছোট্ট বালক/ বালিকার প্রস্রাব তারা আহার করুক বা না করুক। মদ,প্রবাহিত রক্ত,মৃত জানোয়ারের গোসত,ঐ সমস্ত প্রাণীর প্রস্রাব ও গোবর যাদের গোস্ত ভক্ষণ হারাম। গরুর গোবর, কুকুরের বিষ্টা, মোরগ এবং হাস ও পানী হাসের বিষ্ঠা। হিংস্র প্রাণীর বিষ্টা, বিড়ালের বিষ্টা, ইদুরের বিষ্টা। বিড়াল এবং ইদুরের প্রস্রাব যদি কাপড়ে লাগে তবে কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরামগণ মনে করেন যে,যদি তা এক দিরহামের বেশী হয় তবে পবিত্র। আর কিছুসংখ্যক না করেন। সাপের বিষ্টা,ও প্রস্রাব। জোকের বিষ্টা।আঠালো ও টিকটিকির রক্ত যদি তা প্রবাহিত হয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/৪৬)
নাজাসতে গালিজাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে, এক দিরহাম (তথা বর্তমান সময়ের পাঁচ টাকার সিকি) পরিমাণ বা তার চেয়ে কম হলে, উক্ত কাপড়ের সাথে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা জরুরী যদি সময়-সুযোগ থাকে।
দ্বিতীয় প্রকারঃ নাজাসতে খাফিফাহ ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,নাজাসতে খাফিফাহ, যা এক চতুর্থাংশের কম হলে ক্ষমাযোগ্য।
চতুর্থাংশ কিসের?
সেটা নিয়ে কিছুটা মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, কাপড় বা শরীরের যে অংশে নাজাসত লাগবে তার চতুর্থাংশ উদ্দেশ্য যেমন, আস্তিন, হাতা এবং হাত পা ইত্যাদি। এটাই বিশুদ্ধ মত। ঐ সমস্ত প্রাণীর প্রস্রাব যেগুলোর গোস্ত ভক্ষণ করা হালাল এবং ঐ সমস্ত পাখীর বিষ্টা যেগুলোর গোসত ভক্ষণ করা হারাম। এগুলা হল নাজাসতে খাফিফাহ। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/৪৬)
নাজাসতে খাফিফাহ কাপড় বা শরীরে লাগলে এক চতু্র্থাংশ পর্যন্ত মাফ। তথা ঐ কাপড় পরিধান করে নামাজ পড়লে নামায বিশুদ্ধ হবে। যদিও তা ধৌত করা জরুরী যদি হাতে সময়- সুযোগ থাকে।
পবিত্র করার পদ্ধতিঃ পবিত্রকরণ এর দিক দিয়ে নাজাসত আবার দুই প্রকারঃ যথা- (ক) দৃশ্যমান নাজাসত (খ)অদৃশ্যমান নাজাসত
ক) কাপড়ে প্রথম প্রকার তথা দৃশ্যমান নাজাসত লাগলে সেই নাজাসতকে দূর করে দিলেই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে নাজাসত দূর করতে ধৌত করার কোনো পরিমাণ নেই। যতবার ধৌত করলে নাজাসত দূর হবে ততবারই ধৌত করতে হবে।যদি একবার ধৌত করলে তা চলে যায় তবে একবারই ধৌত করতে হবে।
খ) কাপড়ে দ্বিতীয় প্রকার তথা অদৃশ্যমান নাজাসত লাগলে, কাপড়কে তিনবার ধৌত করে তিনবারই নিংড়াতে হতে এবং শেষ বার একটু শক্তভাবে নিংড়ানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বাহির না হয়। (ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া;২/৫৭৪,জা' মেউল ফাতাওয়া;৫/১৬৭)