যে কারণে ‘দাম’ শব্দটা আজও টিকে আছে! শের শাহ সূরীর আশ্চর্য মুদ্রা সংস্কার!
আজও আমরা দোকানে গিয়ে কোনো কিছুর মূল্য জানতে চাইলে বলি—
“দাম কত?”
কিন্তু জানেন কি, এই ‘দাম’ শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে? এই শব্দের ইতিহাস জড়িয়ে আছে ভারতের এক শাসকের সঙ্গে —তিনি হলেন শের শাহ সূরী।
১৫৪০ থেকে ১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মাত্র পাঁচ বছরের শাসনকালেই শের শাহ সূরী ভারতে এমন সব প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার আনেন, যার ভিত্তিতেই পরবর্তীকালে মুঘল সাম্রাজ্য দাঁড়িয়ে যায় মজবুতভাবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল —
মুদ্রা সংস্কার বা Currency Reform.
তিনি এক একক ও নির্ভরযোগ্য মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করেন, যাতে তিন প্রকার মুদ্রা ছিল —
• রূপিয়া (Rupiya) – রুপোর মুদ্রা
• দাম (Dam) – তামার মুদ্রা
• মোহর (Mohur) – সোনার মুদ্রা
“দাম” কী ছিল? দাম ছিল তামার তৈরি ছোট মুদ্রা, যা দৈনন্দিন লেনদেনে ব্যবহৃত হতো। ১ রূপি = ৪০ দাম — এটাই ছিল তৎকালীন মূল্যমানের অনুপাত। অর্থাৎ, “দাম” ছিল আজকের “পয়সা” বা “ছোট টাকা”-র সমতুল্য।
শের শাহের প্রবর্তিত এই মুদ্রা ব্যবস্থা এতটাই কার্যকর ছিল যে মুঘল সম্রাট আকবর-ও তা অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করেন। “দাম” মুদ্রা প্রথম চালু করেন শের শাহ সূরী। তার থেকেই বাংলায় “দামের মূল্য”, “দাম বেশি”, “দাম কম”—এইসব প্রবাদ ও শব্দরূপ আজও আমাদের ভাষায় বেঁচে আছে।