মুরগির রোগ প্রতিরোধে টিকা ও ওষুধ ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, কারণ এটি মুরগির স্বাস্থ্যের উন্নতি, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি রোধে সহায়ক। নীচে গুরুত্বপূর্ণ টিকা এবং ওষুধের তালিকা দেওয়া হলো:
প্রতিরোধমূলক টিকা
১. মারেকস রোগের টিকা (Marek's Disease Vaccine)
-
সময়: ডিম ফুটানোর পর ১ দিনের মধ্যে প্রয়োগ।
-
উদ্দেশ্য: ভাইরাসজনিত স্নায়বিক ও টিউমার সৃষ্টিকারী রোগ প্রতিরোধ।
২. নিউক্যাসল রোগের টিকা (Newcastle Disease Vaccine)
-
সময়: ৭ দিন বয়সে প্রথম ডোজ এবং ২১ দিনে বুস্টার ডোজ।
-
উদ্দেশ্য: শ্বাসযন্ত্র ও স্নায়বিক সমস্যাজনিত রোগ প্রতিরোধ।
-
আইবিডি টিকা (Infectious Bursal Disease – Gumboro Vaccine)
-
সময়: ১৪ দিন এবং ২১ দিন বয়সে প্রয়োগ।
-
উদ্দেশ্য: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা।
-
ফাউল পক্স টিকা (Fowl Pox Vaccine)
-
সময়: ৪-৮ সপ্তাহ বয়সে প্রয়োগ।
-
উদ্দেশ্য: ত্বকের ভাইরাসজনিত ক্ষত প্রতিরোধ।
-
এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা (Avian Influenza Vaccine)
-
সময়: সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োগ।
-
উদ্দেশ্য: বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ।
ওষুধের ব্যবহার
১. অ্যান্টিবায়োটিক
-
সাধারণ প্রয়োগ: শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ প্রতিরোধ।
-
উদাহরণ: অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, টাইলোসিন।
-
অ্যান্টি-ককসিডিয়াল ওষুধ
-
উদ্দেশ্য: ককসিডিওসিস রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা।
-
উদাহরণ: এমপ্রোলিয়াম, সালফাকুইনক্সালিন।
-
ডি-ওয়ারমার (কৃমির ওষুধ)
-
উদ্দেশ্য: পরজীবী কৃমি দূর করা।
-
উদাহরণ: ফেনবেনডাজল, পাইরান্টেল।
-
ভিটামিন ও খনিজ সম্পূরক
-
উদ্দেশ্য: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং পুষ্টিহীনতা রোধ।
-
উদাহরণ: ভিটামিন এ, ডি, ই এবং ক্যালসিয়াম সম্পূরক।
-
প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক
-
উদ্দেশ্য: মুরগির অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখা।
সাধারণ পরামর্শ
-
টিকা প্রয়োগের সময় ডোজ এবং সঠিক পদ্ধতি মেনে চলুন।
-
টিকা দেওয়ার আগে মুরগি সম্পূর্ণ সুস্থ কিনা তা নিশ্চিত করুন।
-
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
-
রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
-
খামারের স্যানিটেশন ও মুরগির খাদ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত রাখুন।
এর মাধ্যমে মুরগির রোগ প্রতিরোধ এবং উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব।