"বডি লাইন" ইতিহাসে এক অত্যন্ত বিতর্কিত এবং আলোচিত ক্রিকেট কৌশল হিসেবে পরিচিত। এটি মূলত অস্ট্রেলিয়া দলের বিরুদ্ধে ১৯৩২ সালে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক হ্যারি ব্রডার কর্তৃক ব্যবহৃত হয়। এই কৌশলের মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যাটসম্যানের শরীরের কাছে দ্রুত এবং আক্রমণাত্মক বাউন্সার ডেলিভারি করা, যাতে ব্যাটসম্যানের শারীরিক আঘাতের সম্ভাবনা বাড়ানো যায় এবং তাদের মানসিকভাবে চাপানো যায়।
"বডি লাইন" কৌশল এবং এর উদ্ভব:
১৯৩২ সালের অ্যাশেজ সিরিজ:
অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার অ্যাশেজ সিরিজ-এ ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি ব্রডার প্রথম "বডি লাইন" কৌশলটি প্রয়োগ করেন। এই কৌশলে, ইংল্যান্ডের বোলাররা অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের শরীরের দিকে লক্ষ্য করে দ্রুত বাউন্সার বল ছুঁড়তে থাকেন। এর ফলে, ব্যাটসম্যানরা বেশিরভাগ সময় তাদের শরীরের কাছে খেলতে বাধ্য হয়, যার ফলে সহজে আউট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
বিপুল বিতর্ক:
কৌশলটি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের মধ্যে বিরোধ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তারা মনে করেছিল যে, এটি অপ্রয়োজনীয় আক্রমণাত্মক এবং ক্রিকেটের কৌশলগত নীতির বিরুদ্ধে ছিল। বিশেষত, ডগলাস জার্ডিন এবং হ্যারি চ্যাপম্যান-এর মতো খেলোয়াড়রা এই কৌশলটির তীব্র সমালোচনা করেন। কিছু প্রতিবাদ ছিল যে, এটি ব্যাটসম্যানের শারীরিক আঘাতের কারণ হতে পারে, এবং খেলাটির প্রতি সম্মান হারানোর মতো ছিল।
আইসিসি’র প্রতিক্রিয়া:
বিতর্কের পর, ক্রিকেট আইন সংশোধন করা হয়, এবং বডি লাইন কৌশলকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু নতুন নিয়ম প্রবর্তিত হয়। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ডও এই কৌশলের প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং প্রতিবাদ করে।
"বডি লাইন" কৌশলের পরে:
পরবর্তী সময়ে বডি লাইন কৌশলটি ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি বিতর্কিত অধ্যায় হয়ে ওঠে, তবে এটি ক্রিকেটের কৌশলগত উন্নতি এবং শক্তিশালী বোলিংয়ের ধারণা দেয়। যদিও এর সময়কাল সীমিত ছিল, তবে এটি পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট কৌশলে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে এবং ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়ায়।
---
এটি ক্রিকেটের একটি বিতর্কিত এবং উত্তাল অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়, যা আজও ইতিহাসে আলোচনা এবং গবেষণার বিষয় হয়ে রয়েছে।