প্লাস্টিক দূষণ পরিবেশের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি স্থলজ ও জলজ উভয় পরিবেশের জন্যই বিপদজনক। নিচে এর কয়েকটি প্রধান ক্ষতিকর দিক আলোচনা করা হলো:
১. জলজ প্রাণীর উপর প্রভাব:
* প্লাস্টিক বর্জ্য বিশেষ করে সমুদ্র এবং অন্যান্য জলাশয়ে জলজ প্রাণীদের জন্য মারাত্মক হুমকি।
* অনেক সামুদ্রিক প্রাণী প্লাস্টিককে খাদ্য মনে করে গিলে ফেলে, যার ফলে তাদের পরিপাকতন্ত্র বন্ধ হয়ে যায় এবং তারা মারা যায়।
* প্লাস্টিকের টুকরা তাদের শরীরে আটকে গিয়ে শ্বাসরোধ করতে পারে অথবা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
* প্লাস্টিক ক্ষুদ্র কণায় (মাইক্রোপ্লাস্টিক) ভেঙে গিয়ে খাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে, যা মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর মাধ্যমে মানুষের শরীরেও প্রবেশ করতে পারে।
২. স্থলজ পরিবেশের উপর প্রভাব:
* প্লাস্টিক মাটিতে মিশে মাটির উর্বরতা কমিয়ে দেয় এবং গাছের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।
* প্লাস্টিক বর্জ্য মাটিতে থাকা উপকারী জীবাণুর কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।
* প্লাস্টিক পোড়ালে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়, যা বায়ু দূষণ করে এবং মানুষের শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য রোগের কারণ হতে পারে।
* প্লাস্টিক বর্জ্য দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশে টিকে থাকে, যা পরিবেশের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
৩. মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব:
* মাইক্রোপ্লাস্টিক খাদ্য ও পানীয়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
* কিছু প্লাস্টিকে বিসফেনল এ (BPA) এবং ফ্যাথালেটস-এর মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা মানুষের হরমোন এবং প্রজনন ক্ষমতার উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
* প্লাস্টিক পোড়ানোর ফলে নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ক্যান্সার এবং অন্যান্য শ্বাসকষ্টজনিত রোগের কারণ হতে পারে।
৪. অন্যান্য প্রভাব:
* প্লাস্টিক বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং নর্দমা বন্ধ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করতে পারে।
* প্লাস্টিক দূষণ পর্যটন শিল্পের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে, রিসাইকেল করে এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমরা প্লাস্টিক দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে পারি।