সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল এবং এনক্রিপশন হল দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা তথ্য সুরক্ষা এবং সাইবার আক্রমণ থেকে ডেটা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল:
সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল হল একটি ধারাবাহিক নিয়মাবলী বা স্ট্যান্ডার্ড যা একটি সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের মধ্যে ডেটা ট্রান্সফারের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকে যেমন:
-
অথেন্টিকেশন: যে ব্যক্তি বা সিস্টেমটি অ্যাক্সেস করতে চাইছে, তার পরিচয় নিশ্চিত করা। যেমন পাসওয়ার্ড বা দুই-স্তরের অথেন্টিকেশন।
-
অuthorization: একবার পরিচয় নিশ্চিত হলে, সেই ব্যক্তিকে বা সিস্টেমটিকে কোন তথ্য বা পরিষেবা অ্যাক্সেস করতে দেওয়া হবে তা ঠিক করা।
-
এন্টি-ম্যালওয়্যার: ম্যালওয়্যার বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সিস্টেমের প্রতিরক্ষা।
কিছু সাধারণ সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল:
-
HTTPS (Hypertext Transfer Protocol Secure): এটি একটি নিরাপদ যোগাযোগ প্রোটোকল যা ওয়েব ব্রাউজার এবং সার্ভারের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের সময় এনক্রিপশন ব্যবহার করে।
-
SSL/TLS (Secure Sockets Layer/Transport Layer Security): এটি একটি সুরক্ষা প্রোটোকল যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য ট্রান্সফারের সময় এনক্রিপশন এবং অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়।
-
IPsec (Internet Protocol Security): এটি একটি প্রোটোকল যা ইন্টারনেট প্রটোকল (IP) স্তরে নিরাপত্তা সরবরাহ করে।
এনক্রিপশন:
এনক্রিপশন হল একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে ডেটা বা তথ্যকে এমনভাবে রূপান্তরিত করা হয় যে, এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা সিস্টেমের দ্বারা ডিকোড বা পড়া যেতে পারে। এটি মূলত দুটি ধাপে কাজ করে:
-
এনক্রিপশন কীগুলি: একটি কোড বা চাবির মাধ্যমে ডেটাকে রূপান্তরিত করা হয়। এই চাবি ছাড়া ডেটা বোঝা সম্ভব নয়।
-
ডিক্রিপশন: নির্দিষ্ট চাবি ব্যবহার করে এনক্রিপ্ট করা ডেটাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়, যাতে এটি পড়া যায়।
এনক্রিপশন সাধারণত দুটি প্রকারের হয়:
-
সিমেট্রিক এনক্রিপশন: এই পদ্ধতিতে, ডেটা এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করার জন্য একই চাবি ব্যবহার হয়। উদাহরণ: AES (Advanced Encryption Standard)।
-
অ্যাসিমেট্রিক এনক্রিপশন: এই পদ্ধতিতে দুটি ভিন্ন চাবি ব্যবহৃত হয় - একটি পাবলিক চাবি এবং একটি প্রাইভেট চাবি। পাবলিক চাবি দিয়ে ডেটা এনক্রিপ্ট করা হয় এবং প্রাইভেট চাবি দিয়ে ডিক্রিপ্ট করা হয়। উদাহরণ: RSA (Rivest–Shamir–Adleman)।
কিভাবে সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল এবং এনক্রিপশন ডেটা সুরক্ষা নিশ্চিত করে:
-
ডেটা গোপনীয়তা: এনক্রিপশন নিশ্চিত করে যে শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তি বা সিস্টেমই ডেটা দেখতে বা পড়তে পারবে, অন্যথায় এটি অজ্ঞাত থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য এনক্রিপ্ট করা থাকলে, শুধুমাত্র ব্যাংক সিস্টেম এবং গ্রাহকই এটি দেখতে পাবে।
-
ডেটা অখণ্ডতা: সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল নিশ্চিত করে যে, ট্রান্সফার হওয়া ডেটার মধ্যে কোন ধরনের পরিবর্তন বা ত্রুটি হয়নি। এক্ষেত্রে, ইন্টিগ্রিটি চেক বা হ্যাশ ফাংশন ব্যবহার করা হয়।
-
অথেন্টিকেশন এবং অথোরাইজেশন: সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকল অনুমোদন ছাড়া কোন ব্যক্তি বা সিস্টেমকে ডেটার অ্যাক্সেস অনুমতি দেয় না, যা অবৈধ প্রবেশের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।
-
ডেটা অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ: সাইবার সিকিউরিটি প্রোটোকলগুলি নিশ্চিত করে যে শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যবহারকারীরা সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে প্রবেশ করতে পারে এবং তাদের অনুমোদিত ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে।
এই সব প্রোটোকল এবং এনক্রিপশন পদ্ধতির মাধ্যমে সাইবার আক্রমণ, হ্যাকিং, ডেটা চুরি বা ম্যান-ইন-দ্য-মিডল আক্রমণ ইত্যাদির বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।