কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং মেশিন লার্নিং (ML) আধুনিক প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রে সহায়তা করে। তবে, এগুলো ইন্টারনেটে প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঝুঁকিও সৃষ্টি করতে পারে।
AI এবং মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে প্রাইভেসি ও নিরাপত্তার ঝুঁকি:
ডেটা সংগ্রহ এবং অপব্যবহার
AI অ্যালগরিদম বিশাল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে সক্ষম।
ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন: লোকেশন, ব্রাউজিং হিস্টোরি) বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারীর আচরণ পূর্বাভাস করা হয়।
এটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা বা তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করা হলে ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার হতে পারে।
ফিশিং এবং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
AI ব্যবহার করে উন্নত ফিশিং মেসেজ বা ভুয়া ইমেইল তৈরি করা সহজ।
মেশিন লার্নিং মডেল ব্যবহার করে মানুষের মতো ইমেইল বা মেসেজ লেখা যায়, যা ব্যবহারকারীদের প্রতারণায় ফেলতে পারে।
উদাহরণ: ভুয়া ওয়েবসাইট বা লিঙ্কের মাধ্যমে পাসওয়ার্ড চুরি।
ডিপফেক প্রযুক্তি
AI-চালিত ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের মুখ, কণ্ঠ বা ভিডিও মডিফাই করা সম্ভব।
এটি মিথ্যা তথ্য ছড়াতে এবং পরিচয় চুরি করতে ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ: কোনো ব্যক্তির ভুয়া ভিডিও তৈরি করে তাকে বিপদে ফেলা।
স্বয়ংক্রিয় হ্যাকিং
AI অ্যালগরিদম দিয়ে সাইবার আক্রমণ আরও স্বয়ংক্রিয় এবং দক্ষ করা যায়।
মেশিন লার্নিং ভিত্তিক টুল দিয়ে নিরাপত্তা সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে দ্রুত হ্যাকিং করা সম্ভব।
উদাহরণ: পাসওয়ার্ড ক্র্যাকিং বা নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ।
গোপনীয়তার উপর নজরদারি
AI-চালিত নজরদারি সিস্টেম, যেমন: ফেসিয়াল রিকগনিশন বা ক্যামেরা মনিটরিং, মানুষের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে।
সরকারী পর্যায়ে এটি সামাজিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
ব্যক্তিগত তথ্যের অজান্তে ট্র্যাকিং বৃদ্ধি পায়।
বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ
AI মডেলগুলো ভুল বা পক্ষপাতমূলক ডেটার ওপর প্রশিক্ষিত হলে ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
উদাহরণ: চাকরির আবেদন বা ক্রেডিট স্কোরিংয়ের ক্ষেত্রে ভুল প্রভাব।
সম্ভাব্য সমাধান:
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য শক্তিশালী আইন (যেমন: GDPR) প্রয়োগ।
AI এবং মেশিন লার্নিং উন্নয়নে নৈতিক দিক নিশ্চিত করা।
ফিশিং, ডিপফেক এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সচেতন করা।
AI এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ইন্টারনেট নিরাপত্তা ও প্রাইভেসির জন্য বিপুল সম্ভাবনা তৈরি করলেও, এটি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করলে বড় ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পাশাপাশি নৈতিক এবং আইনগত কাঠামো নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।