ইস্টকে (Yeast) ফানজাই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করার কারণ হলো এটি ফানজাই রাজ্যের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। ফানজাই (Fungi) রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত জীবগুলো বিশেষ ধরনের গঠন ও বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। ইস্ট এই বৈশিষ্ট্যগুলো প্রদর্শন করে। নিচে কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলো:
১. কোষের গঠন:
-
ইস্ট এককোষী জীব হলেও এটি ইউকারিওটিক (Eukaryotic), অর্থাৎ এর কোষে নিউক্লিয়াস ও ঝিল্লিবেষ্টিত অঙ্গাণু রয়েছে, যা ফানজাই রাজ্যের বৈশিষ্ট্য।
-
এটি ছত্রাকের মতোই কোষ প্রাচীর ধারণ করে, যা কাইটিন (Chitin) বা গ্লুকান দিয়ে তৈরি।
২. পুষ্টি গ্রহণের পদ্ধতি:
-
ইস্ট অন্যান্য ফানজাইয়ের মতো হেটেরোট্রফিক (Heterotrophic), অর্থাৎ এটি নিজের খাদ্য তৈরি করতে পারে না।
-
এটি জৈব পদার্থ থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে, সাধারণত শর্করাকে (Sugars) ভেঙে এনার্জি উৎপাদন করে।
৩. প্রজনন:
-
ইস্ট ফানজাইয়ের মতো অযৌন (Asexual) এবং যৌন (Sexual) উভয় পদ্ধতিতে প্রজনন করতে পারে।
-
অযৌন প্রজননে ইস্ট সাধারণত বাডিং (Budding) পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা ফানজাই রাজ্যের অনেক জীবের সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
৪. শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্য:
-
ইস্ট ফানজাই রাজ্যের মতো এনজাইমেটিক ক্রিয়া (Enzymatic Activity) প্রদর্শন করে। উদাহরণস্বরূপ, এটি ফার্মেন্টেশন (Fermentation) প্রক্রিয়ায় শর্করাকে অ্যালকোহল ও কার্বন ডাই-অক্সাইডে পরিণত করে।
-
এই বৈশিষ্ট্য ইস্টকে খাদ্য শিল্পে (যেমন ব্রেড, বিয়ার তৈরি) এবং বায়োটেকনোলজিতে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।
৫. পরিবেশগত ভূমিকা:
-
অন্যান্য ফানজাইয়ের মতো ইস্টও ডিকম্পোজার হিসেবে ভূমিকা পালন করে। এটি জৈব পদার্থকে ভেঙে পরিবেশে পুষ্টি পুনরায় সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
৬. জিনগত সম্পর্ক:
-
ইস্টের জিনগত বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে এটি ফানজাই রাজ্যের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত।
উপসংহার:
ইস্টকে ফানজাই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কারণ এটি ফানজাই রাজ্যের বৈশিষ্ট্য যেমন ইউকারিওটিক কোষ গঠন, হেটেরোট্রফিক পুষ্টি গ্রহণ, বিশেষ প্রজনন প্রক্রিয়া এবং পরিবেশগত ভূমিকা প্রদর্শন করে। এটি ফানজাই রাজ্যের একটি বিশেষ সদস্য, যা খাদ্য, শিল্প ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।