91 বার দেখা হয়েছে
"কুরআন ও হাদিস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সত্য নবী ছিলেন, উলামায়ে কিরাম কুরআন হাদীস থেকে, বাস্তব ঘটনা থেকে এর তিন হাজারের মত প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এ বিষয়ের উপর অনেক বড় বড় পুস্তিকাও রচিত হয়েছে। এই প্রমাণগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ- 

১. নবী (সাঃ) যে সত্য নবী ছিলেন -তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে কুরআন । একজন উম্মী মানুষ হওয়া সত্ত্বেও নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুখ থেকে কুরআনের ন্যায় এরূপ মহাজ্ঞান ভাণ্ডারের গ্রন্থ প্রকাশ পাওয়াই প্রমাণ করে যে, তিনি মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসব জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছেন। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন চ্যালেঞ্জও পেশ করেছেন। ইরশাদ করেছেনঃ- 

وان كنتم في ريب مما نزلنا على عبدنا فأتوا بسورة من مثله وادعوا شهدائكم من دون الله ان كنتم صادقين فان لم تفعلوا ولن تفعلوا . الآية - 

অর্থাৎ, আমি আমার বান্দার উপরে যে কিতাব নাযিল করেছি, এ ব্যাপারে তোমাদের যদি সামান্যতম সন্দেহ থাকে (যে, এটা তাঁর রচনা করা কি-না, তাহলে এই কুরআনের বড় কোন সূরা নয়,) তাহলে এর ছোট্ট সূরার মত একটা সূরা রচনা করে দেখাও। (তোমরা নিজেরা যদি না পার, তাহলে) তোমাদের সব সহযোগীদের ডেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এরকম একটা সূরা রচনা করে দেখাও। (আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ) তবুও তোমরা এর সমকক্ষ রচনা পেশ করতে পারবে না। (বাস্তবেও কোন দিন কেউ কুরআনের সমকক্ষ রচনা পেশ করতে পারেনি)। (সূরাঃ ২ বাকারা, আয়াত- ২৩)

২. নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দ্বারা বহু সংখ্যক মু'জিযা প্রকাশ পাওয়া।

৩. নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সত্য নবী হওয়ার আরেকটি প্রমাণ হল তাঁর মহরে নবুওয়াত। নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিঠে মহরে নবুওয়াত বা নবুওয়াতের সীল মহর ছিল। অর্থাৎ, তাঁর পিঠে বিশেষ একটা চিহ্ন ছিল। এটা ছিল একটু উঁচু কালো একটা মাংসখন্ড। সাহাবায়ে কেরামও এটা দেখেছেন। আগের যুগের কিতাবেও এ সম্বন্ধে বর্ণনা ছিল। 

৪. নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সত্য হওয়ার আরও একটা বড় প্রমাণ হল- সেই যুগের কাফেররা, সেই যুগের ঘোর শত্রুরাও রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মিথ্যুক বলতে পারেনি। মুসলমান, অমুসলমান, শত্রু, বন্ধু নির্বিশেষে সকলেই তাঁকে “আল-আমীন” বলে ডাকত। অর্থাৎ সে আমাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সত্যবাদী। তিনি যখন নবুওয়াতের দাবী করেছেন, আল্লাহর পক্ষ থেকে বাণী প্রাপ্ত হওয়ার দাবী করেছেন, তখনও তারা তাঁকে মিথ্যাবদী বলতে পারেনি। বরং তাঁকে সত্যবাদীই মনে করেছে।

তখনকার কাফেরদের একজন বড় নেতা ছিলেন নযর ইবনে হারেছ । তিনি একদিন গোত্রের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট লোকদেরকে ডেকে বললেনঃ এত বৎসর যাত মুহাম্মাদের পুরো জীবন আমাদের মধ্যে কেটেছে। এতদিন তোমরা সবাই তাঁকে আল-আমীন বলে ডেকে আসছ। আর এখন যখন তাঁর চুল পাকা শুরু হয়েছে, যখন সে নবুওয়াত পাওয়ার দাবী করছে, এখন তোমরা তাঁকে মিথ্যা বলবে কিভাবে? মিথ্যা বলার বয়স তো পার হয়ে গেছে। সে তো পরীক্ষিত সত্যবাদী। এখন সে নবুওয়াতের দাবী করার পর তোমরা তাঁকে মিথ্যুক বলতে পার না। এটা তোমাদের জন্য একটা পরীক্ষার মুহুর্ত, তোমাদের কি উপায় আছে তা ভেবে দেখ।

রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তারা সকলে সত্যই জানতো। এতদ্বসত্ত্বেও তারা যতটুকু বিরোধিতা করত, তা শুধু ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্যই করত; একটা ঘটনা- একবার হজ্জের মৌসুমের আ মক্কার বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ পরামর্শের জন্য এক জায়গায় সমবেত হল এ উদ্দেশ্যে যে, এখন হজ্জের মৌসুম আসছে। দেশ বিদেশ থেকে বহু লোক আসবে। মুহাম্মাদ তাঁর ধর্মের কথা প্রচার করবে। এভাবে তার ধর্ম দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বে। বহু লোক মুসলমান হয়ে যাবে। এটা ঠেকানোর উপায় কি? তখনকার সময় মুশরিকদের মধ্যকার সবচেয়ে প্রবীন নেতা ওলীদ ইবনে মুগীরা। সে একে একে সকলের মতামত জিজ্ঞাসা করা শুরু করল।

একজন বললঃ আমরা প্রচার করে দিব যে, সে পাগল। সে পাগলের মত আবল তাবল বকে চলেছে, তার কথার কোন আগাগোড়া নেই, কোন দিক দিশা নেই। ওলীদ ইবনে মুগীরা বললঃ যদি এটা বল, তাহলে মানুষ যখন তার কথা শুনবে, শুনেই বুঝবে যে,এটা পাগলের কথা নয়। শেষ পর্যন্ত তোমাদেরকেই মানুষে মিথ্যুক জানবে।

আর একজন বললঃ তাহলে আমরা তাকে কবি বলে দিব। আমরা বলব, সে খএব ভালো ভাষা জানে। কাব্য রচনা করে কথার যাদু দিয়ে সে মানুষকে মুগ্ধ করে ফেলে। ওলীদ ইবনে মুগীরা বললঃ এই যুক্তিও চলবে না। আরব দেশের সবাই কবিতা সম্পর্কে রাখে। কবিতা কি, কবিতার কথা কি হয়, আর মুহাম্মাদের কথা কি এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য সবাই বুঝতে পারবে। তখন শেষ পর্যন্ত লোকেরা বলবে তোমরাই মিথ্যুক, তোমরাই মিথ্যা প্রচার করছে। এতে করে তার প্রতি মানুষের ভক্তি আরও বেড়ে যাবে। অতএব এই যুক্তিও চলবে না।

আরেকজন বললঃ তাহলে আমরা তাকে যাদুকর বলে দিব। ওলীদ ইবনে মুগীরা বললঃ যাদু তো আমরাও জানি। যাদুর কথা আর মুহাম্মাদের কথা এক নয়। আরবের বহু লোকও যাদু জানে। তারা তাঁর বাণী শুনবে। শুনে বুঝবে যে, এটাতো যাদু নয়, এতো আদর্শের কথা বলা হচ্ছে। যাদুর ভিতর তো কোন আদর্শের কথা থাকে না। যাদুর ভিতর কেবল নির্দিষ্ট কিছু শব্দ মন্ত্র পাঠ করা হয়। অতএব মানুষ বুঝবে যে, মুহাম্মাদের কথা যাদু নয়, তোমরাই মিথ্যা প্রচার করছ। তোমাদেরকেই মিথ্যুক বলা হবে। এভাবে তাদের অনেকে অনেক রকম প্রস্তাব দিল কিন্তু তাকে মিথ্যুক বলে দেয়া হবে এ প্রস্তাব কেউ দিতে পারল না। কারণ, এতদিন তারা তাঁকে আল-আমীন বলে আসছে, এখন তাঁকে মিথ্যুক কিভাবে বলবে? এভাবে কোন দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্তে তারা উপনীত হতে পারল না। শেষ পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে সহজ মনে করে তারা তাঁকে যাদুকর বলেই অপপ্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিল।

তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি নেতাকে লক্ষ্য করে বলেছিল স্যার! যদি মুহাম্মাদের কোন দোষই না থাকে, তাহলে তাঁকে মানতে আমাদের বাঁধা কোথায় ? ওলীদ ইবনে মুগীরা বলেছিল তোমরা জানো আমরা হলাম আবদে মানাফ গোত্রের লোক, আর মুহাম্মাদ হল বনু হাশেম গোত্রের লোক। এই দুই গোত্রের মধ্যে সুদীর্ঘকাল ধরে একটা প্রতিযোগিতা চলে আসছে। তারা কোন ভাল কাজ করলে আমরাও অনুরূপ একটা ভাল কাজ করে দেখাই। কখনও কোন ব্যাপারে আমরা তাদের থেকে পিছিয়ে থাকি না। এখন ঐ বংশের লোকেরা বলছে তাদের মধ্যে একজন নবী হয়েছেন। আমরা কোন নবী পেশ করতে পারছি। না। এ অবস্থায় যদি আমরাও তাঁকে মেনে নেই, তাহলে আমাদের গোত্র ছোট হয়ে যাবে। তাই আমরা তাঁকে মানতে পারছি না। দেখা গেল নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সত্য নবী, এটা তারা সকলেই বিশ্বাস করত। কিন্তু শুধু একটা ঠুনকো স্বার্থের কারণে তারা তাঁকে মানত না।

তখনকার কাফেরদের এক বড় নেতা ছিলেন আবু সুফিয়ান। আর এক বড় নেতা ছিলো আখনাস ইবনে শোরায়ক। একদিন আখনাছ ইবনে শুরায়ক চিন্তা করল যে, আমরা সবাই যখন মুহাম্মাদকে সত্য বলে বিশ্বাস করি, তাহলে তাকে মানি না কেন? এর একটা সুষ্ঠ ফয়সালা হওয়া চাই। সে আবু সুফিয়ানের বাড়িতে গেল। আবু সুফিয়ানকে বলল? মুহাম্মাদের মধ্যে যদি কোন দোষ না থাকে, তাহলে আমাদের মেনে নিতে অসুবিধা কি ? আবু সুফিয়ান আমতা আমতা করে শেষ পর্যন্ত বললঃ আমরা তাঁর কোন দোষ দেখাতে পারব না। তারপর সে আর এক নেতা আবু জেহেলের কাছে যেয়ে বললঃ মুহাম্মাদের কোন দোষ না থাকলে আমরা তাঁকে মেনে নেই? আবু জেহেল বললঃ মুহাম্মাদের মধ্যে কোন দোষ নেই, তবে অসুবিধা একটাই; তা হল মুহাম্মাদ বনু হাশেম গোত্রের লোক। এখন আমরা যদি তাঁকে নবী মেনে নেই, তাহলে আমাদের গোত্র ছোট হয়ে যায়। তাই আমরা তাঁকে মেনে নিতে পারছি না। 

৫. আরও একটা বড় প্রমাণ হল আগের যুগের আসমানী কিতাব সমূহের বর্ণনা। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে আসমানী কিতাবের অধিকারী ছিল বিশেষ ভাবে দুইটা দল। একটা হলো ইয়াহুদী, আরেকটা হলো নাসারা বা খৃষ্টান। ইয়াহুদীদের কিতাব হলো তাওরাত, আর নাসারা বা খৃষ্টানদের কিতাব হলো ইঞ্জীল । এই তাওরাত এবং ইঞ্জীলে পরিষ্কার ভালে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমন সম্পর্কে সুসংবাদ ছিল। এমনকি তাঁর দেহের গঠন কেমন হবে, তাঁর চোখ কেমন হবে, তাঁর চুল কেমন হবে, কোন অবস্থায় তিনি আবির্ভূত হবেন। কোন এলাকায় তিনি আবির্ভূত হবেন, কখন কখন তিনি সফরে যাবেন, কোথায় কোথায় যাবেন- এইসব অবস্থাও বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা ছিল। আগের যুগের ঐতিহাসিকরা তাওরাত এবং ইঞ্জীল থেকে এরকম বহু উদ্ধৃতি উল্লেখ করে দেখিয়েছেন যে, শেষ নবীর আগমন এবং তাঁর গুণাগুণ ইত্যাদি সম্পর্কে কত পরিষ্কার বর্ণনা এসব কিতাবে ছিল। ইঞ্জিল ও তাওরাতে হজরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আগমন সম্পর্কে কি কি বর্ণিত হয়েছে তা জানতে চোখ রাখুন এই Ask Answer সাইটেই। 

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

34,051 টি প্রশ্ন

33,007 টি উত্তর

1,576 টি মন্তব্য

3,212 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
22 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 22 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 4285
গতকাল ভিজিট : 46623
সর্বমোট ভিজিট : 42741371
  1. MuntasirMahmud

    302 পয়েন্ট

    60 টি উত্তর

    2 টি গ্রশ্ন

  2. Limon54

    105 পয়েন্ট

    20 টি উত্তর

    5 টি গ্রশ্ন

  3. Kuddus

    85 পয়েন্ট

    17 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  4. TeddyAhsan

    71 পয়েন্ট

    4 টি উত্তর

    1 টি গ্রশ্ন

  5. TAKRIMISLAM

    68 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    18 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...