পিরিয়ড নিয়মিত করতে চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের থেরাপি দিয়ে থাকেন। যার ফলে কারো কারো পা ব্যথা, পেট ব্যথা, মাথাব্যথা, খাবারে অরুচি, মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই পিরিয়ড অনিয়মিত হলে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা
১.অ্যালোভেরা:
ঘৃতকুমারী বা আ্যলোভেরার ভিতরের অংশ বা শাস যা রূপচর্চা, চুলের যত্নে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।এগুলোর পাশাপাশি পিরিয়ড নিয়মিত করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া হরমোন রেগুলেশন-এ সাহায্য করে এই আ্যলোভেরা। বেশি ভালো ফলাফল পেতে হলে তার জন্য প্রতিদিন সকালে তাজা অ্যালোভেরার পাতার রস একটু মধু দিয়ে মিশিয়ে খেতে হবে খালি পেটে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যেন পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় না খাওয়া হয়।
২.কাঁচা পেপেঃ
কাঁচা পেপে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে যেমন ত্বক মসৃন রাখে,হজমে সাহায্যে করে,ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে।পিরিয়ড রেগুলেশন এর সাহায্য করে থাকে । জরায়ুর মাসল ফাইবার কন্ট্রাকশন-এ সাহায্য করে থাকে কাচাঁ পেপে। নিয়মিত কয়েক মাস পর পর কাঁচা পেপের রস খাওয়া হলে পিরিয়ড নিয়মিত হয়।কিন্তু পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় এটা না খাওয়ায় উচিত।
৩. আদাঃ
ঠান্ডা -কাশি,গ্যাস,গলা ব্যাথা ইত্যাদি সারাতে আদার গুনের কোন তুলনা হয়না। তেমনি অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে আদার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিদিন খাবার পর তিন বেলায় ১ কাপ পরিমাণ পানিতে ১ চা চামচ পরিমাণ আদা কুঁচি দিয়ে ৫-৭ মিনিট পর্যন্ত ফুটিয়ে নিতে হবে।তারপর এর সাথে অল্প পরিমাণে মধু বা চিনি মিশিয়ে নিয়ে খেতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে , এই পানীয়টি খালি পেটে খাওয়া যাবে না ।কিছু মাসের ভিতরই এর ফল পাবেন। পিরিয়ড সাইকেল রেগুলেশন-এ সাহায্য করে করে থাকে আদা। অনিয়মিত পিরিয়ড কে নিয়মিত করে দেয় এই আদা।
৪.অ্যাপেল সাইডার ভিনেগারঃ
রক্তে ইনসুলিন ও সুগার এর মাত্রার তারতম্য এর ফলে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার-এর ফলে আপনি আপনার অনিয়মিত পিরিয়ড অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন।
এক গ্লাস পানির সাথে ২ চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার নিয়ে খাবার আগে প্রতিদিন খেতে হবে। পিরিয়ড সাইকেল নিয়ন্ত্রণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবে এই আ্যপেল সাইডার ভিনেগার।
৫. দারুচিনিঃ
যে সকল খাবার বহু গুনের জন্য গুনান্বিত দারুচিনি তার মাঝে অন্যতম। অনিয়মিত পিরিয়ড সরাতে হলে লেবুর রস বা চার সাথে দারুচিনি গুড়া করে মিশিয়ে খেতে হবে। এতে পিরিয়ড নিয়মিত৷ হয় এবং তার সাথে পিরিয়ড চলাকালীন ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
৬.কাঁচা হলুদ:
মসলা জাতীয় দ্রব্য হলেও হলুদ সেই প্রাচীন কাল থেকেই চিকিৎসা বিষয়ে এর ব্যবহার বিভিন্নমুখী । শরীরে হরমোনের ভাসাম্য ঠিক রাখতে এবং অনিয়মিত পিরিয়ড নিয়মিত করতে কাচাঁ হলুদ সাহায্য করে থাকে ।এছাড়াও কাঁচা হলুদ জরায়ু সঙ্কোচন-প্রসারণ করে থাকে। তাছাড়া কাচাঁহলুদের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি পিরিয়ড-এর ব্যাথা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এক কাপ পরিমাণ দুধের সাথে চা চামচের চার ভাগের এক ভাগ কাঁচা হলুদ গুড় বা মধু দিয়ে কিছুদিন খেতে হবে।
৭.জিরাঃ
পিরিয়ড নিয়মিত করতে জিরা খুব ভালো কাজে করে। এক গ্লাস পানির সাথে ২ চা চামচ জিরা দিয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে । তারপর পরের দিন সকালে সেই পানি ও জিরা খেয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত পান করলে সুফল পাওয়া যাবে।
৮.সবজির জুস ও ফলঃ
খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন বেশি বেশি করে সবজির জুস ও ফল রাখুন। এতে করে শরীর ঠাণ্ডা রাখবে ও হরমোন রেগুলেশন-এর সাহায্য হবে। যেমন- পুদিনা পাতা, গাজর,করলার রস, ভিটামিন সি জাতীয় ফলের রস ইত্যাদি প্রতিদিন দিনে দুই’বার করে পান করতে পারেন। কিন্তু পিরিয়ড নিয়মি হতে গাজর ও আঙুরের রস খুব ভালো এবং বেশি উপকারী।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ কখন নিবেন ?
১. দিন দিন পিরিয়ডের ভিতরের সময়ের ব্যাবধান পরিবর্তন দেখা দিলে।
২.৩৫ দিনের পর ও ২১ দিনের আগে পিরিয়ড হলে।
৩.পিরিয়ডের স্থানীত্ব সময় যদি ৭ দিনের বেশি বা ৩ দিনের কম হয়।
৪.পিরিয়ড এর সময় অতিরিক্ত পেটে ব্যাথা ও অতিরিক্ত রক্তপাত যদি হয়।
৫.মানসিক চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে।
৬.বছরে তিন বা তিন বারের কম বার পিরিয়ড হলে।