147 বার দেখা হয়েছে
"ইসলামের ইতিহাস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন

হযরত বিলাল হাবশী রাযিয়াল্লাহু আনহু একজন বিখ্যাত সাহাবী। যিনি মসজিদে নববীর স্থায়ী মুআজ্জিন ছিলেন। শুরুতে তিনি একজন কাফেরের গোলাম ছিলেন। ইসলাম গ্রহণ করার কারণে তাঁকে বিভিন্ন ধরনের কষ্ট দেয়া হতো। উমাইয়া ইবনে খালফ মুসলমানদের চরম শত্রু ছিল। সে তাঁকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দুপুরের সময় উত্তপ্ত বালুর উপর চিৎ করে শোয়ায়ে একটি ভারী পাথর তাঁর বুকের উপর চাপিয়ে দিত। যাতে তিনি নড়াচড়া করতে না পারেন। আর বলতো যে, হয় এই অবস্থায় মরে যাবে, আর বাঁচতে চাইলে ইসলাম ছেড়ে দিবে। কিন্তু হযরত বিলাল (রাযিঃ) এই অবস্থাতেও 'আহাদ আহাদ' বলতে থাকতেন অর্থাৎ আমার মাবুদ একমাত্র আল্লাহ। রাত্রে শিকলে বেঁধে তাঁকে বেত্রাঘাত করা হতো এবং পরদিন উত্তপ্ত জমিনের উপর শোয়ায়ে ক্ষত-বিক্ষত শরীরকে আরও বেশী ক্ষত-বিক্ষত করা হতো। যেন তিনি অতিষ্ঠ হয়ে ইসলাম ত্যাগ করেন। নতুবা ছটফট করতে করতে মৃত্যুমুখে পতিত হন। নির্যাতনকারীরা ক্লান্ত হয়ে যেতো। কখনও আবূ জাহল কখনও উমাইয়া ইবনে খালফ কখনও বা অন্য কেউ পালাক্রমে শাস্তি দিত। প্রত্যেকে শাস্তি দেয়ার বেলায় নিজের সম্পূর্ণ শক্তি ব্যয় করতো। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক (রায়িঃ) তাঁকে এই অবস্থায় দেখতে পেয়ে ক্রয় করে আযাদ করে দেন।

শিক্ষাঃ- যেহেতু আরবের মূর্তিপূজকরা নিজেদের মূর্তিগুলিকেও মাবুদ বা উপাস্য বলে মনে করতো, তাই সেটার মুকাবিলায় ইসলামের শিক্ষা ছিল তাওহীদ বা একত্ববাদের। এ কারণেই হযরত বিলাল (রাযিঃ) এর মুখে শুধু একত্ববাদেরই যিকির ছিল। এটা মূলত প্রেম ও ভালবাসার বিষয়। আমরা যেখানে মিথ্যা মুহব্বতের বেলায় দেখতে পাই যে, যার সাথে মুুহব্বত হয়ে যায়, তার নাম উচ্চারণ করতেও ভালো লাগে। অনর্থক তার নাম বারবার উচ্চারণ করা হয়। সেখানে আল্লাহ পাকের মহব্বত ও ভালবাসার ব্যাপারে আর কি বলবো, যা দ্বীন দুনিয়া উভয় স্থানে কাজে আসবে। এ কারণেই যখন হযরত বিলাল (রাযিঃ) কে সর্বপ্রকারে নির্যাতন করা হতো, কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি দেয়া হতো, মক্কার বালকদের হাতে ছেড়ে দেয়া হতো, তারা তাঁকে অলিতে গলিতে নিয়ে ঘুরাতো, তখন তাহার জবানে শুধু 'আহাদ' 'আহাদ' জপ উচ্চারিত হতে থাকত। 

এরই প্রতিদানস্বরূপ হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে তিনি মুআজ্জিন নিযুক্ত হয়েছিলেন। মদীনায় ও সফরে - সর্বাবস্থায় আজান দেয়ার দায়িত্ব তাঁকে দেয়া হয়। 

হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর মদীনা শরীফে বসবাস করা ও হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্থান শূন্য দেখা তাঁর জন্য কষ্টকর হয়ে গেল। এজন্য তিনি অবশিষ্ট জীবন জিহাদে কাটিয়ে দেয়ার মনস্থ করলেন। সুতরাং জিহাদে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে তিনি চলে গেলেন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত তিনি আর মদীনা মুনাওয়ারায় ফিরে আসেন নি। একদিন তিনি স্বপ্নযোগে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যিয়ারত লাভ করলেন। হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেন, বিলাল! এটা কেমন জুলুমের কথা যে, আমার নিকট একেবারেই আসো না! ঘুম থেকে জাগ্রত হয়েই সাথে সাথে তিনি রওয়ানা হয়ে মদীনা তাইয়্যেবায় এসে উপস্থিত হলেন। হযরত হাসান ও হযরত হোসাইন (রাযিঃ) তাঁকে আযান দেয়ার অনুরোধ করলেন। আদরের দুলালদের অনুরোধ উপেক্ষা করার উপায় ছিল না। তিনি আযান দিতে আরম্ভ করলেন। হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যমানার আযানের আওয়াজ শোনার সাথে সাথেই  সমগ্র মদীনায় শোকের রোল পড়ে গেলো। মহিলাগণ পর্যন্ত কাঁদতে কাঁদতে ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন। বেশ কিছুদিন সেখানে অবস্থান করার পর হজরত বিলাল রাযিয়াল্লাহু আনহু সেখান থেকে ফিরে আসেন। অবশেষে হিজরী বিশ সনে দামেশকে তাঁর ইন্তেকাল হয়।

(উসদুল গাবাহ্)

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

34,064 টি প্রশ্ন

33,010 টি উত্তর

1,579 টি মন্তব্য

3,222 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
14 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 14 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 14144
গতকাল ভিজিট : 36095
সর্বমোট ভিজিট : 43016987
  1. Towhid-khan

    55 পয়েন্ট

    1 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  2. Sorwar201277

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  3. Farhana

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  4. Rifa_Moni

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  5. Tumpa_Moni

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...