ডায়রিয়া হলে কী করণীয়
ডায়রিয়া হলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। পানিশূন্যতা তীব্র হলে তা বিপদজনক হতে পারে – বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য।
-
শরীর থেকে যতোটা লবণ ও পানি বেরিয়ে যাচ্ছে তা পূরণ করা। এজন্য রোগীকে বারে বারে খাবার স্যালাইনসহ তরল খাবার খাওয়ানো। এছাড়া যে কারণে ডায়রিয়া হয়েছে তার চিকিৎসা করা।
-
যতোবার পাতলা পায়খানা বা বমি হবে ততোবারই সমপরিমাণ খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ান।
-
রোগীকে স্বাভাবিক ও পুষ্টিকর খাবার খেতে দিতে হবে।
শিশুদের ডায়রিয়া হলে করণীয়
শিশুর ডায়রিয়া হলে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি খাবার স্যালাইন খাওয়ান। এছাড়া শিশুদের মধ্যে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলির দেখা গেলে সরাসরি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ :
-
২৪ ঘন্টার বেশি ডায়রিয়া হলে।
-
যদি ১০২ ডিগ্রী বা তার বেশি জ্বর থাকলে।
-
তলপেট বা মলদ্বারে গুরুতর ব্যাথা অনুভব করা।
-
মলের সাথে যদি রক্ত বের হয়। মলের রং যদি কালো হয়।
-
পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে।
প্রাপ্ত বয়স্কদের ডায়রিয়া হলে করণীয়
প্রাপ্তবয়স্কদের ডায়রিয়া হলে বারে বারে খাবার স্যালাইনসহ তরল খাবার ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তবে নিম্নোক্ত উপসর্গগুলি দেখা গেলে সরাসরি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত :
-
ডায়রিয়া যদি ২ দিনের বেশি থাকে।
-
যদি ১০২ ডিগ্রী বা তার বেশি জ্বর থাকে।
-
বার-বার বমি হলে।
-
২৪ ঘন্টার মধ্যে ৬ বার বা তার বেশি পায়খানা হলে।
-
তলপেট বা মলদ্বারে গুরুতর ব্যাথা অনুভব করলে।
-
মলের সাথে যদি রক্ত বের হয়। মলের রং যদি কালো হয়।
-
পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়
ডায়রিয়া প্রতিরোধরে জন্য নিম্নলিখিত নির্দেশাবলী মেনে চলুন:
-
বিশুদ্ধ পানি পান করুন।
-
অধিক পরিমাণে পানি ও লবণ গ্রহণ (বিশেষত রমজান মাসে ইফতার পরবর্তী সময় হতে সাহ্রী পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত অন্তত ০২ (দুই) লিটার পানি পান) করুন।
-
অত্যধিক গরম পরিবেশে কাজ না করা। যদি করতে হয়, সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পরপর ঠাণ্ডা পরিবেশে বিশ্রাম গ্রহণ করুন।
-
আবদ্ধ পরিবেশে কাজ না করা। কাজ করার জায়গায় বাতাস চলাচল করতে পারে এরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
-
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা (যেমন- পায়খানা থেকে বের হয়ে এবং খাবার আগে হ্যান্ড ওয়াশ/ সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, নিয়মিত নখ কাটা, পরিষ্কার বস্ত্র পরিধান করা এবং নিয়মিত গোসল করা) নিশ্চিত করুন।
-
অতিগরমে তৈলাক্ত ও পঁচাবাসি খাবার গ্রহণ বর্জন করুন এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হতে খাবার গ্রহণ করা হতে বিরত থাকুন।
-
নিরাপদ পানি পান করুন।
-
সুষম খাবার গ্রহণ করুন।
-
শিশুদের জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ান।
-
সম্ভব হলে রোটা ভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।
-
স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করুন। বিশেষ করে সংক্রামক রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
-
যদি ডাইরিয়া বা বমি শুরু হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ খাবার স্যালাইন খাওয়া শুরু করুন এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
পানিশূন্যতা কিভাবে পূরণ করা যায়
ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ লবণ ও পানি বের হয়ে যায় ফলে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দেয়। এসময় শরীরের পানিশূন্যতা রোধের জন্য নিম্ন বর্ণিত দু’টি পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতে পারে:
-
খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানো।
-
রোগীর বেশি পানিশূন্যতা হলে অথবা খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানোর পরও যদি পানিশূন্যতা না কমে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিরার মধ্যে (ইন্ট্রাভেনাস) স্যালাইন দিয়ে পানিশূন্যতা পূরণ করতে হয়।