হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাতু আসসালাম আল্লাহ তা'য়ালার হুকুম আহকাম (বিধি-বিধান) কিতাবসমূহ নবীগণের কাছে নিয়ে আসতেন। কতক সময় নবীগণের সাহায্য-সহায়তা এবং আল্লাহ ও রসূলের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যও পাঠানো হয়েছে। কোনো কোনো সময় আল্লাহ তা'য়ালার নাফরমান বান্দাদের প্রতি আজাবও তাঁর মাধ্যমে পাঠিয়ে থাকেন।
হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম সৃষ্টিকে রুযি পৌঁছানো এবং বৃষ্টি প্রভৃতির ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন। আর অসংখ্য ফেরেশতা তাঁর অধীনে কাজ করেন। কেউ কেউ মেঘমালার ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত, কেউ কেউ বায়ুর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত, কেউ কেউ সাগর-সমুদ্র, নদী-নালা, পুকুর এবং খাল-বিলেরও ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন। এ সব বিষয়ের ব্যবস্থাপনা তাঁরা আল্লাহ তা'য়ালার নির্দেশ অনুযায়ী সম্পন্ন করে থাকেন।
হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম কেয়ামতের প্রাক্কালে শিংগায় ফুঁক দেবেন।
হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম প্রাণীদের প্রাণসংহার করার কাজে নিয়োজিত এবং তাঁর তত্ত্বাবধানেও অসংখ্য ফেরেশতা কাজ করেন। সৎ বান্দাদের প্রাণ সংহারে রয়েছেন পৃথক ফেরেশতা বাহিনী এবং অসৎ বান্দাদের প্রাণসংহারে রয়েছেন পৃথক ফেরেশতা বাহিনী। এছাড়াও ফেরেশতাগণের কতিপয় কাজ এইঃ-
১/ প্রত্যেক মানুষের সাথে দুজন করে ফেরেশতা থাকেন। একজন ফেরেশতা তাঁর নেককাজ তথা সৎ কর্মগুলো লিখে রাখেন এবং অন্যজন মন্দ কর্মগুলো লিখে রাখেন। এসব ফেরেশতাগণকে "কিরামান কাতেবীন" বলা হয়।
২/ কতিপয় ফেরেশতা মানুষকে বিপদ-আপদ এবং রোগব্যাধি থেকে নিরাপদ রাখার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। শিশু, বুড়ো, দুর্বলদের এবং (অন্যান্য) যাদের ব্যাপারে আল্লাহর আদেশ হয়, তাঁরা তাদের হেফাজত করেন।
৩/ কতিপয় ফেরেশতা মানুষের মৃত্যুর পর কবরে তাদেরকে প্রশ্ন করার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন। প্রত্যেকটি মানুষের কবরেই দু'জন করে ফেরেশতা আসেন। তাঁদেরকে "মুনকার-নাকির" বলা হয়।
৪/কতিপয় ফেরেশতা এই কাজে নিয়োজিত আছেন যে- বিশ্বময় ঘোরাফেরা করতে থাকবেন এবং যেখানে আল্লাহ তা'য়ালার জিকির আজকার হয়, ওয়াজ নসিহত হয়, কোরআন তেলাওয়াত হয়, দুরুদ শরীফ পাঠ করা হয়, দ্বীনী ইলমের শিক্ষা হয়- এমন সব মজলিস বা সভা সমাবেশে উপস্থিত হবেন এবং যত মানুষ এসব মজলিস বা সভা সমাবেশে এই সৎ কর্মে অংশগ্রহণ করেন, তাঁদের উপস্থিতির সাক্ষ্য আল্লাহ তা'য়ালার দরবারে দেবেন।
পৃথিবীতে যেসব ফেরেশতা কাজ করেন তাঁদের সকাল-সন্ধ্যায় পরিবর্তনও হয়। ভোরে নামাজের সময় রাতের ফেরেশতাগণ আকাশে চলে যান এবং দিনের ফেরেশতাগণ এসে যান। আবার আসরের নামাজের পর দিনের ফেরেশতাগণ চলে যান এবং রাতের ফেরেশতাগণ এসে যান।
৫/ কতিপয় ফেরেশতা বেহেশতের ব্যবস্থাপনা ও তার কাজ কর্মে নিয়োজিত রয়েছেন।
৬/ কতিপয় ফেরেশতা দোযখের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন।
৭/ কতিপয় ফেরেশতা আল্লাহ তা'য়ালার আরশ বহন করার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন।
৮/ আর কতিপয় ফেরেশতা আল্লাহ তা'য়ালার ইবাদত বন্দেগী ও তাসবীহ তাকদীস তথা প্রশংসা ও মহত্ব বর্ণনায় নিয়োজিত থাকেন।
আর ফেরেশতাগণ যে এসব কাজকর্ম করেন- এ কথা কোরআন মাজীদ ও হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে।