492 বার দেখা হয়েছে
"কুরআন ও হাদিস" বিভাগে করেছেন

2 উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
জুলকারনইন এর আক্ষরিক অর্থ হল ‘দুই শিং বিশিষ্ট’। কুরআন শরীফের সূরা কাহাফের আয়াত নম্বর ৮৩-১০১ অংশে জুলকারনাইন সম্পর্কিত বর্ণনা আছে। নবী হিসেবে জুলকারনাইনের নাম উল্লেখ নেই যদিও কিন্তু তিনি নবী ছিলেন না এমনটিও বলা হয়নি। বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাকে সব বিষয়ে পথনির্দেশ বা দিকনির্দেশ অথবা কার্যপোকরণ দিয়েছেন। তিনি এরপর দুটি পথ অনুসরণ করেন। এর মধ্যে এক পথে গিয়ে তিনি ইয়াজুজ মাজুজের হাতে অত্যাচারিত এক জাতির দেখা পান। তিনি তাদের জন্য গলিত তামার তৈরি একটি প্রাচীর বানিয়ে দেন। সূরা কাহাফ ৮৩-৮৬ নম্বর আয়াতে নিম্নরূপ বর্ণিত আছে- ‘তারা আপনাকে জুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, আমি তোমাদের কাছে তার কিছু অবস্থা বর্ণনা করব। আমি তাকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম এবং প্রত্যেক বিষয়ের কার্যোপকরণ দান করেছিলাম। অতঃপর তিনি এক কার্যোপকরণ অবলম্বন করলেন। অবশেষে তিনি যখন সূর্যের অস্তাচলে পৌঁছালেন; তখন তিনি সূর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন এবং তিনি সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেলেন। আমি বললাম, হে যুলকারনাইন! আপনি তাদেরকে শাস্তি দিতে পারেন অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পারেন।’ জুলকারনইন পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে বেড়াতেন নির্যাতিত, বঞ্চিত, শাসকের হাতে শোষিত লোকদের মুক্তি দিতেন। কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী অরুণাচলে, যেখান থেকে সূর্য উদিত হয় সেখানে ইয়াজুজ, মাজুজের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করার জন্য দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন জুলকারণাইন। আর সে স্থানটি পাহাড়ের প্রাচীরের মাঝখানে। সূরা কাহাফের ৯৩ হতে ৯৮ নম্বর আয়াতে জুলকারনাইনের এই প্রাচীর নির্মাণের উল্লেখ আছে।
2 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
তারা তোমাকে জুলকারনাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, শিগগিরই আমি তোমাদের কাছে তার বিষয়ে বর্ণনা করব। [সুরা : কাহফ, আয়াত : ৮৩] 

তাফসির : আলোচ্য আয়াত থেকে পৃথিবীর দুই প্রান্তের বাদশাহ জুলকারনাইন সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। 

কোরআনে বর্ণিত জুলকারনাইন কে এবং কোন যুগে ছিলেন—এ বিষয়ে তাফসিরবিদরা একমত হতে পারেননি। প্রাচীন তাফসিরবিদদের মধ্যে ইমাম রাজি (রহ.)-এর মতে, জুলকারনাইনের প্রকৃত নাম সিকান্দার, যিনি আলেকজান্ডার নামে পরিচিত। তিনি দারা ইবনে দারাকে একাধিকবার পরাজিত করেছেন। ইমাম রাজি (রহ.) লিখেছেন, ‘অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে জুলকারনাইন হলেন বাদশাহ সিকান্দার ইবনে ফিলিবুস ইউনানি।’ (আততাফসিরুল কাবির : ২১/৪৯৩) 

ইমাম রাজি (রহ.)-এর পথে হেঁটেছেন তাফসিরবিদ আবু হাইয়্যান (রহ.)। তিনি লিখেছেন, ‘ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, কোরআনে বর্ণিত গুণাবলির অধিকারী সিকান্দার ছাড়া আর কেউ নেই।’ (আলবাহরুল মুহিত : ৭/২২০) 

ইমাম কুরতুবি (রহ.) ইবনে ইসহাকের বরাতে উল্লেখ করেছেন, ‘জুলকারনাইন ছিলেন মিসরের অধিবাসী। তাঁর নাম মিরজবান ইবনে মারদুবাহ আল ইউনানি। তিনি ইউনান বিন ইয়াফেস বিন নূহ (আ.)-এর সন্তান। ইবনে হিশাম বলেছেন, তাঁর নাম সিকান্দার।’ (তাফসিরুল কুরতুবি : ১১/৪৫) 

প্রাচীন তাফসিরবিদদের মধ্যে ইবনে কাসির (রহ.) মনে করেন, সিকান্দার নামে পৃথিবীতে দুজন বাদশাহ অতিবাহিত হয়েছেন। একজন ইবরাহিম (আ.)-এর যুগের। আরেকজন অ্যারিস্টটলের যুগের। প্রথমজন আল্লাহর প্রিয় বান্দা ছিলেন। কোরআনে তাঁর কথাই বলা হয়েছে। (তাফসিরুল ইবনে কাসির : ৫/১৮৯) 

এ বিষয়ে আধুনিক গবেষকদের মধ্যে দেওবন্দ ঘরানার আলেম হিফজুর রহমান (রহ.) তাঁর ‘কিসাসুল কোরআন’ গ্রন্থে বলেছেন, জুলকারনাইন হলেন ইরানের বাদশাহ খসরু। 

'তাফহিমুল কোরআন’ গ্রন্থে এসেছে, জুলকারনাইন সম্পর্কে কোরআন থেকে চারটি কথা জানা যায়। এক. তাঁর ‘শিংওয়ালা’ উপাধি সম্পর্কে ইহুদিরা জানত। দুই. তাঁর বিজয়াভিযান পূর্ব থেকে পশ্চিমে পরিচালিত হয়েছিল এবং উত্তর-দক্ষিণ দিকে বিস্তৃত হয়েছিল। তিন. তিনি ইয়াজুজ মাজুজের হাত থেকে রক্ষার জন্য কোনো পার্বত্য গিরিপথে একটি মজবুত প্রাচীর নির্মাণ করেন। চার. তিনি আল্লাহর আনুগত্যশীল ও ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন। 

এই চার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে প্রথম বৈশিষ্ট্য সহজেই খসরু বা সাইরাসের বেলায় প্রযোজ্য। কেননা বাইবেলের দানিয়েল পুস্তকে দানিয়েল (আ.)-এর যে স্বপ্নের কথা বর্ণনা করা হয়েছে, তাতে তিনি ইরানিদের উত্থানের আগে তাঁর সাম্রাজ্যকে একটি দুই শিংওয়ালা মেষের আকারে দেখেছেন। দ্বিতীয় চিহ্নটিরও বেশির ভাগ তাঁর সঙ্গে খাপ খেয়ে যায়; কিন্তু পুরোপুরি নয়। 

তৃতীয় চিহ্নটির ব্যাপারে বলা যায়, এ কথা প্রায় সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে যে ইয়াজুজ মাজুজ বলতে রাশিয়া ও উত্তর চীনের এমন সব উপজাতিদের বোঝানো হয়েছে, যারা তাতারি, মঙ্গল, হুন ও সেথিন নামে পরিচিত। প্রাচীন যুগ থেকে সভ্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করে আসছিল। তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ককেশাসের দক্ষিণাঞ্চলে দরবন্দ ও দারিয়ালের মাঝখানে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল। খসরু এ প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন, তা এখনো প্রমাণিত হয়নি। 

শেষ চিহ্নটি প্রাচীন যুগের একমাত্র খসরুর সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। কেননা তাঁর শত্রুরাও তাঁর ন্যায়বিচারের প্রশংসা করেছে। তাই কোরআন নাজিলের আগে যতজন বিশ্ববিজেতা অতিক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্য থেকে একমাত্র খসরুর মধ্যেই জুলকারনাইনের আলামতগুলো বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়; যদিও একেবারে নিশ্চয়তাসহ তাঁকেই জুলকারনাইন বলার জন্য আরো অনেক সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রয়োজন আছে। 

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
15 মার্চ, 2024 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
4 অক্টোবর, 2022 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
12 আগস্ট, 2022 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন জনি

36,280 টি প্রশ্ন

35,489 টি উত্তর

1,742 টি মন্তব্য

3,813 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
4 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 4 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 12124
গতকাল ভিজিট : 15023
সর্বমোট ভিজিট : 53449451
এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
...