মাস্টাইটিস হলো স্তনের টিস্যুর প্রদাহ বা সংক্রমণ, যা সাধারণত স্তন্যদানকারী মায়েদের মধ্যে ঘটে। এটি ব্যথা, লালচে ভাব, ফোলা এবং কখনো জ্বরের কারণ হতে পারে।
মাস্টাইটিসের লক্ষণ
-
স্তনের একটি অংশ লালচে ও ফোলা।
-
স্তন স্পর্শ করলে ব্যথা বা উষ্ণ অনুভূত হয়।
-
স্তন্যদান করার সময় ব্যথা।
-
ক্লান্তি, জ্বর, বা ঠান্ডা লাগা।
-
স্তনের দুধের প্রবাহ কমে যাওয়া।
মাস্টাইটিস হলে করণীয়
মাস্টাইটিসের চিকিৎসা সময়মতো করা জরুরি, কারণ এটি উপেক্ষা করলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। নিচে কিছু করণীয় দেওয়া হলো:
১. স্তন্যদান চালিয়ে যান:
-
স্তন্যদান বন্ধ করবেন না। স্তনে জমে থাকা দুধ সংক্রমণ বাড়াতে পারে।
-
শিশুকে নিয়মিত দুধ পান করান। এটি দুধের জমাট দূর করতে সাহায্য করে।
-
যদি শিশুর দুধ পান করতে সমস্যা হয়, তাহলে পাম্প বা হাত দিয়ে দুধ বের করে ফেলুন।
২. উষ্ণ এবং ঠান্ডা সেঁক:
-
স্তনে দুধ জমাট বাঁধলে উষ্ণ সেঁক নিন। এটি জমাট দুধ সরিয়ে দিতে সাহায্য করে।
-
ব্যথা কমাতে ঠান্ডা সেঁক ব্যবহার করতে পারেন।
৩. সঠিক অবস্থানে স্তন্যদান:
-
শিশুকে স্তন্যদান করার সময় সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করুন যাতে স্তনের সমস্ত অংশ থেকে দুধ বের হয়।
-
শিশুর মুখ পুরোপুরি স্তনের বোঁটা এবং এর চারপাশের অংশ ঢেকে রাখছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৪. পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং পানি পান:
-
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন। এটি সংক্রমণ মোকাবিলায় শরীরকে সাহায্য করবে।
৫. ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ:
-
প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার করা যেতে পারে ব্যথা এবং ফোলা কমানোর জন্য। তবে, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ গ্রহণ করবেন না।
৬. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
-
যদি অবস্থার উন্নতি না হয় বা জ্বর থাকে, তাহলে দ্রুত একজন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
-
ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন, যা সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করবে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
-
স্তন্যদানের আগে এবং পরে স্তন পরিষ্কার রাখুন।
-
শিশুর দুধ চুষতে সমস্যা হলে সঠিক স্তন্যদানের কৌশল শিখুন।
-
স্তনের দুধ জমতে না দেওয়ার চেষ্টা করুন।
-
স্তনব্রা সঠিক মাপের এবং আরামদায়ক ব্যবহার করুন।
মাস্টাইটিস দ্রুত চিকিৎসা করলে সাধারণত সহজেই সেরে যায়। তবে অবহেলা করলে এটি অ্যাবসেস (পুঁজ জমা) তৈরি করতে পারে, যা অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।