কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী, মানুষের হায়াত (জীবনকাল) নির্ধারিত হয় আল্লাহর ইচ্ছায় এবং তা বাড়ানো বা কমানোর ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট দিক রয়েছে।
১. হায়াত নির্ধারণ: কুরআনে আল্লাহ বলেছেন:
"এটা আল্লাহর পক্ষে নির্ধারিত, যিনি যে কোনো সময়ে যাকে চান মৃত্যু দিতে পারেন।" (সূরা আল-আম্বিয়া, ২১:35)
"এবং প্রত্যেক মানুষের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, যা তার মৃত্যুর জন্য নির্ধারিত, এবং সে তা আগেই জানে না।" (সূরা আল-আহকাফ, 46:15)
আল্লাহই সর্বশক্তিমান এবং সকল জীবের হায়াত ও মৃত্যুর সময় নির্ধারণকারী। মানুষ এই বিষয়ে কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না, তবে কিছু কাজ জীবনের দুঃখ বা আনন্দের প্রভাব ফেলতে পারে।
২. হায়াত বাড়ানোর বা কমানোর কারণ: হাদীসে উল্লেখ আছে যে, কিছু বিষয় মানুষের হায়াত বাড়াতে পারে, আবার কিছু বিষয় হায়াত কমাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:
হায়াত বাড়ানোর কারণ:
দ্বীনের প্রতি আনুগত্য এবং ভালো কাজ: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং উত্তম আচরণ করে, তার হায়াত বাড়ানো হয়।" (সহীহ মুসলিম)
সদকা (দান) করা: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "সদকা মানুষের দুঃখ দুরী করে এবং হায়াত বৃদ্ধি করে।" (তিরমিজি)
বয়সের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া: অন্যদের সাথে ভালো আচরণ এবং বৃদ্ধদের প্রতি সম্মান হায়াত বৃদ্ধি করে।
হায়াত কমানোর কারণ:
গুনাহ (পাপ): কিছু হাদীসে এসেছে যে, পাপ ও অনুতপ্ত অপরাধ জীবনের সময় কমাতে পারে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "গুনাহের কারণে হায়াত কমে যায়।" (সুনানে ইবনে মাজার)
কাঁদা ও অভিশাপ: রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি অভিশাপ দেয়, তার হায়াত কমে যায়।" (সহীহ বুখারি)
৩. কুয়ালিটি ও কুস্তুর (আশীর্বাদ) বিষয়ে আল্লাহর ইচ্ছা: আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছু ঘটতে পারে না, তবে মানুষের ভালো কাজ বা কুস্তুর (আশীর্বাদ) তার জীবনের ওপর ভালো প্রভাব ফেলতে পারে। আল্লাহ বলেন:
"এবং কেউ জানে না তার জন্য কি অপেক্ষা করছে, সেও জানে না তার জীবনের কতটুকু সময় আছে।" (সূরা আল-আহকাফ, 46:3)
সারাংশে, মানুষের হায়াত আল্লাহর ইচ্ছায় নির্ধারিত, তবে সৎ কর্ম, সদকা, এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য জীবনের ভালো পরিণতির জন্য সহায়ক হতে পারে, এবং পাপ ও গুনাহের কারণে জীবনের সময় কমতে পারে।