আমাদের জেনে রাখা দরকার যে, শরীয়তের উসূল বা নিয়ম হলো এই - দ্বীন ইসলামের বিধান জানার সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান মাধ্যম হচ্ছে মহা পবিত্রগ্রন্থ কুরআনুল কারীম। তারপর দ্বিতীয় মাধ্যম হচ্ছে হাদীস শরীফের সুবিশাল ভাণ্ডার। তারপরের মাধ্যম হচ্ছে ইজমায়ে উম্মত তথা উম্মতে মুহাম্মাদীর আহলে হক উলামায়ে ইসলামের ইজমা অর্থাৎ সর্বসম্মত ঐক্য। এরপর সর্বশেষ মাধ্যম হচ্ছে কিয়াস। শেষ দুটি মাধ্যমেও দ্বীন ইসলামের অনেক বিধান উৎসারিত হয়েছে, বের হয়েছে। সেগুলোকে মানাও আবশ্যক।
এখন ফিরে আসি আপনার প্রশ্নে। আপনার এই প্রশ্নের উত্তর হলো-
না। বুখারী শরীফ পড়লেই দ্বীনে ইসলামের সকল বিধান জানা যাবে। কারণ, বুখারী শরীফ হচ্ছে হাদীস শরীফের সুবিশাল ভাণ্ডারের মধ্য থেকে কিঞ্চিৎ পরিমাণ এক সংকলন। এর সংকলক ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজেই বলেছেন যে - "আমি এই কিতাবে (বুখারী শরীফে) সবগুলো সহীহ হাদীসই একত্রিত করে দিয়েছি এমন নয়। (এমনটা ভাবার কোনো যুক্তি নেই, কেউ যদি এমনটা মনে করে, তবে তা তার নিতান্তই ভুল ধারণা।) বরং এই কিতাবের হাদীসগুলোর বাইরেও এমন অনেক বহু হাদীস আমি এখানে সন্নিবেশিত করি নি, যেগুলো একদমই সহীহ। সবগুলো সহীহ হাদীস এখানে আনলে কিতাবের কলেবর বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বিধায় আমি সেগুলো ছেড়ে দিয়েছি। সুতরাং এখন কথা হচ্ছে এই যে - হাদীস শরীফ যেহেতু দ্বীন ইসলামের বিধান মানার দ্বিতীয় একটি মাধ্যম, আর স্বয়ং ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি নিজেও যেখানে বলেছেন আমি এই কিতাবে সকল সহীহ হাদীস সন্নিবেশিত করি নি, অর্থাৎ বুখারী শরীফের হাদীসগুলোর বাইরে বরং বলা যায় যে, আরও বেশী পরিমাণ সহীহ হাদীস রয়ে গেছে, সেহেতু বুখারী শরীফ পড়লেই দ্বীনের সকল বিষয় জানা হয়ে যাবে বিষয়টি এমনটি নয়।
অতএব, দ্বীনের সকল বিষয় জানতে চাইলে বা জানার জন্য সর্বপ্রথম মহা পবিত্রগ্রন্থ আল কুরআনুল কারিম, তারপর বুখারী শরীফ যেহেতু সহীহ হাদীস গ্রন্থ সমূহের মধ্যে প্রধান একটি সহীহ হাদীসের গ্রন্থ, সেহেতু বুখারী শরীফসহ অন্যান সকল সহীহ হাদীসের গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করা, সহীহ হাদীসের মানের বাইরে অন্যান্য মানের হাদীসের কিতাবগুলোও অধ্যয়ন করা, কেননা, সেসকল হাদীস সমূহ থেকেও দ্বীনের অনেক বিধানাবলী উৎসারিত হয়েছে। এরপর উম্মতের ইজমা ও কিয়াসের কিতাব তথা ফিকহী কিতাবগুলোও অধ্যয়ন করা আবশ্যক।
ধন্যবাদ।