শিরক ফিস-সিফাত এর অনেক প্রকার রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করছি -
১. শিরক ফিল কুদরত। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'য়ালার মতো কুদরত "ক্ষমতার গুণ" অন্য কারও জন্য সাব্যস্ত করা। যেমন এরূপ মনে করা যে, অমুক নবী বা অলী কিংবা শহীদ বা পীর-ফকির বৃষ্টি বর্ষণ করতে পারে কিংবা ছেলে-মেয়ে দিতে পারে, অথবা মনোবাসনা পূরণ করে দিতে পারে, কিংবা রুজি-রোজগার দান করতে পারে, অথবা জীবন-মৃত্যু তাঁরই হাতে, কিংবা কাউকে লাভ-ক্ষতির সম্মুখীন করার বা সম্মানিত অসম্মানিত করার কুদরত বা ক্ষমতা তার হাতে রয়েছে। এ যাবতীয় বিষয়ই হলো শিরক ফিল কুদরত।
২. শিরক ফিল ইলম। আর ইলম অর্থ হলো জানা। অর্থাৎ আল্লাহ তা'য়ালার মতো অন্য কারও জন্য "ইলম গুণ" সাব্যস্ত করা। উদাহরণত - এমন মনে করা যে, আল্লাহ্ তা'য়ালার ন্যায় অমুক নবী কিংবা অলী প্রমুখেরও গায়েবে জ্ঞান ছিল বা আছে। অথবা আল্লাহ্ তা'য়ালার মতো অনু-পরমাণুর জ্ঞান তাদের রয়েছে, আমাদের যাবতীয় অবস্থা সম্পর্কে তারা অবগত, কাছের কিংবা দূরের সব বিষয়াদির খবরাখবর তাদের রয়েছে। এসবই হলো শিরক ফিল ইলম তথা জ্ঞানে শরীক করার অন্তর্ভুক্ত।
৩. শিরক ফিস-সাম্'য়ি ওয়াল বাসার। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'য়ালার শ্রবণ ও দর্শন সম্পর্কিত গুণের সাথে অন্য কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করা। যেমন এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, অমুক নবী বা অলী বা পীর সাহেব আমাদের যাবতীয় কথা কাছে বা দূরে থেকেও শুনে ফেলেন কিংবা আমাদের কাজকর্ম সমূহকে সবখান থেকেই দেখতে পান। এ সবই হচ্ছে শিরক ফিস সাম্'য়ি ওয়াল বাসার।
৪. শিরক ফিল হুকম। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'য়ালার মতো অন্য কাউকে হাকিম তথা হুকুমের অধিকারী মনে করা এবং তার হুকুমকে আল্লাহ্ তা'য়ালার হুকুমের মতো মনে করা ও মান্য করা। যেমন কোন পীর ফকির হুকুম করলেন যে, এ ওযীফাটি আসরের নামাজের পূর্বে পাঠ করবে। তখন এ হুকুম পালন করা এমন অপরিহার্য ও জরুরী মনে করা যে, ওযীফা পূরণ করতে গিয়ে আসরের নামাজের সময় মাকরূহ হয়ে যাওয়া কিংবা নামাজ কাজা হয়ে যাওয়ারও পরোয়া না করা। এটা স্পষ্টতই শিরক ফিল হুকম।
৫. শিরক ফিল ইবাদত। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'য়ালার মতো অন্য কাউকে ইবাদতের যোগ্য মনে করা। যেমন- কোনো কবর বা পীরকে সিজদা করা, সিজদার উপযুক্ত মনে করা, কিংবা কারো উদ্দেশ্যে রুকু করা, কিংবা কোন নবী, অলী, এবং ইমামের নামে রোজা রাখা কিংবা তাদের নামে বা অন্য কারও নামে নজর-মান্নত মানা, কোনো কবর বা পীরের বাড়ি কা'বা ঘরের মত তওয়াফ করা ইত্যাদি। এগুলো সবই হলো শিরক ফিল ইবাদত।