নির্দিষ্ট অঞ্চলে একটি নির্দিষ্ট এলাকার শিক্ষিত ও শিষ্টজনের মৌখিক ভাষাকে মান ধরে চলিত ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ বিভিন্ন অঞ্চলের উপভাষার কথ্য রীতি সমন্বয়ে শিষ্টজনের ব্যবহৃত এই ভাষাই আদর্শ চলিত ভাষা।
চলিত রীতির উদাহরণঃ
”পুল পেরিয়ে সামনে একটা বাঁশ বাগান পড়ল। তারি মধ্য দিয়ে রাস্তা। মচমচ করে শুকনো বাঁশ পাতার রাশ ও বাঁশের খোসা জুতোর নিচে ভেঙে যেতে লাগল। পাশে একটা ফাঁকা জায়গায় বুনো গাছপালা লতা ঝোপের ঘন সমাবেশ। সমস্ত ঝোপটার মাথা জুড়ে সাদা সাদা তুলোর মতো রাধালতার ফুল ফুটে রয়েছে।”———- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
চলিত রীতির বৈশিষ্ট্য সমূহঃ
-
চলিত রীতি পরিবর্তনশীল অর্থাৎ সময়ের প্রবাহের কারনের চলিত রীতি পরিবর্তিত রুপ লাভ করে।
-
চলিত রীতি তদ্ভব শব্দবহুল অর্থাৎ চলিত রীতিতে তদ্ভব শব্দের ব্যবহার বেশি।
-
চলিত রীতি বক্তৃতা, ভাষণ, নাটকের সংলাপ এবং আলাপ-আলোচনার উপযোগী।
-
এ রীতি সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য ও গতিশীল।
-
চলিত ভাষায় অর্ধতৎসম, তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি শব্দের প্রয়োগ বেশি।
-
চলিত ভাষায় কৃত্রিমতা-বর্জিত।
-
চলিত ভাষার সুনির্ধারিত ব্যাকরণ নেই।
-
বাংলা ভাষায় চলিত রীতির প্রবর্তন করেন প্রমথ চৌধুরী।
-
চলিত ভাষায় ক্রিয়াপদের রুপ সংক্ষিপ্ত। যেমন: করেছি, গিয়েছি।
-
চলিত ভাষায় সর্বনাম পদের রুপ সংক্ষিপ্ত হয়। যেমন: তার, তারা, তাদের।
-
সাধু ও চলিত রীতির পার্থক্য কোন কোন পদে বেশি?- সর্বনাম ও ক্রিয়া পদে।