ইলমে কালামের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্বঃ-
ইলমে কালামের গুরুত্ব থাকা না থাকার ব্যাপারে মধ্যপন্থা ছাড়াও দুটো প্রান্তিক মত দেখা যায়। কেউ কেউ অতিরঞ্জিত এবং বাড়াবাড়ি করে। এটাকে হারাম এবং বিদআত বলেছেন, আবার কেউ কেউ এটাকে ফরযে কিফায়া অথবা ফরযে আইন এবং সর্বোত্তম ইবাদত বলে অভিহিত করেছেন। কেননা এটা হল তাওহীদের প্রমাণ এবং আল্লাহর দ্বীনকে রক্ষা করার নাম। এই দুই ধরনের প্রান্তিকতার মাঝামাঝি হল ইমাম গাযালীর মত। তাঁর মতে এই ইলমে ক্ষতির দিকও রয়েছে এবং উপকারের দিকও রয়েছে।
মোল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইলমে কালামের গুরুত্ব এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ- জানা দরকার যে, ইলমুত তাওহীদ হল সর্বশ্রেষ্ঠ ইলম এই শর্তে যে, এটা কিতাবুল্লাহ্, সুন্নাহ্ এবং ইজমা বহির্ভূত হবে না এবং তাতে কেবল যুক্তি নির্ভর দলীল সমূহের সমাবেশ ঘটবে না, যেমন বিদআতপন্থীগণ করে থাকেন এবং তারা সে পথ পরিহার করেছেন যার উপর আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা'আত প্রতিষ্ঠিত আছেন। মোল্লা আলী কারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইলমে কালামকে দ্বীনের মৌলিক বিষয় গণ্য করে লিখেন যে, এটা সেই ইলম, যাতে এমন বিষয়ের আলোচনা করা হয়, যেগুলির প্রতি ঈমান আনা আবশ্যক।
ইলমে কালাম দ্বীনের আকীদা সমূহের জন্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করে থাকে এবং এভাবে ঈমানের ভিত্তির হেফাযত করে থাকে। অনুরূপভাবে এ শাস্ত্র সর্বপ্রথম দ্বীনী আকীদা সম্পর্কে সন্দেহ পোষণকারী এবং তার অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
আল্লামা তাফতাযানী কালাম নামে অভিহিত ইলমুত-তাওহীদ ওয়াস-সিফাতকে ইলমুশ শারাইয়ে ওয়াল- আহকাম এবং কাওয়াইদু আকাইদিল ইসলাম এর ভিত্তি বলে আখ্যায়িত করে বলেন যে, ইলমুল-কালাম হল সন্দেহ ও সংশয় এবং বাতিল আকীদা সমূহের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দানকারী। মোটকথা ইলমে কালাম হল যাবতীয় ইলমের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং দ্বীনী ইলম সমূহের প্রধান। এ শাস্ত্রের মুখ্য উদ্দেশ্য হল ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সৌভাগ্য লাভে সফলতা অর্জন করা।