ড. সুনীতিকুমার চট্টেঅপাধ্যায় এর মতে – “কোনো ভাষায় যে ভাষাবিদ উক্তির সার্থকতা আছে এবং গঠনের দিক হইতে যাহা স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেইরূপ একক উক্তিকে ব্যাকরণে বাক্য বলা হয়।” ভাষার বিচারে বাক্যের নিম্নলিখিত তিনটি গুণ থাকা চাই –
(ক) আকাঙ্ক্ষা (খ) আসত্তি (গ) যােগ্যতা
✔ (ক) আকাক্ষা : বাক্যের অর্থ পরিষ্কার ভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা তা-ই আকাঙ্ক্ষা। যেমন- কলেজে আজ– এটুকু বললে বাক্য সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে না, আরও কিছু শোনার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু যদি বলা হয় ‘আজ কলেজে যাব না’ তবেই এ বাক্যে আকাক্ষা নিবৃত্তি হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য গঠন হয়েছে।
(খ) আসত্তি : মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যে শব্দগুলো এমন ভাবে পর পর সাজাতে হবে যাতে মনোভাব প্রকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। বাক্যের অর্থসঙ্গতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদবিন্যাসই অসত্তি। যেমন : ‘হয় হতে মেঘ বৃষ্টি’ এখানে পদ সন্নিবেশিত ঠিকভাবে না হওয়ায় শব্দগুলোর অন্তর্নিহিত ভাবটি যথাযথ প্রকাশ হয় নি। তাই এটিকে বাক্য বলা যাবে না। মনোভাব পূর্ণ ভাবে প্রকাশ করার জন্য পদগুলোকে নিম্নলিখিত ভাবে সাজাতে হবে।- ‘মেঘ হতে বৃষ্টি হয‘ এ বাক্যটি আসত্তিগুণ সম্পন্ন।
(গ)যোগ্যতা : বাক্যস্থিত পদসমূহের অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলবন্ধনের নাম যোগ্যতা। যেমন – ‘হাতি আকাশে উড়ে যায়’ এ বাক্যটি ভাব প্রকাশে যোগ্যতা হারিয়েছে কারণ হাতি আকাশে উড়তে পারে না। যদি বলা হয় – পাখি আকাশে উড়ে যায় তবে একটি যোগ্যতা সম্পন্ন বাক্য হবে কারণ পদের অন্তর্গত এবং ভাবগত সমন্বয় রয়েছে।