পঠিত: 69 বার
আমাদের দেশে সবচেয়ে পরিচিত ফলগুলোর তালিকায় শীর্ষে কলা। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এ ফলটির অনেক গুণ রয়েছে। এ ফলটির জনপ্রিয়তা রয়েছে পুরো বিশ্বব্যাপী। ফুড কেমিস্ট্রি জার্নালের তথ্যানুসারে— সারাবিশ্বে প্রায় ৩০০টিরও বেশি ধরনের কলা চাষ হয়ে থাকে।
কলাতে থাকা ক্যালরি ও চিনির বিষয়ে অনেকেরই ধারণা কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ) চিনি না খাওয়ার বিষয়ে কঠোর নির্দেশিকা দিলেও সেটি কেবল অতিরিক্ত চিনি বা প্রক্রিয়াজাত চিনির বিষয়ে বলেন। কিন্তু প্রাকৃতিকভাবে তাজা ও পুরো ফল থেকে যে চিনি শরীরে যায় তা আমাদের ক্ষতি করে না।
একটি বড় কলায় (৮-৯ ইঞ্চি) রয়েছে ১২০ ক্যালরি ও ৪৯০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এতে একজন মহিলার দৈনিক পটাশিয়ামের চাহিদার ১৯ শতাংশ এবং একজন পুরুষের চাহিদার ১৫ শতাংশ পূরণ হয়। এই পুষ্টিকর উপাদান শরীরের সোডিয়াম অপসারণ করে রক্তনালি শিথিল করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এই সোনালি ফলটি ভিটামিন বি৬–এর খুব ভালো উৎস। ভিটামিন বি৬ শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া কলাতে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, প্রোটিন ও ফ্যাট।
১. পটাশিয়ামে পরিপূর্ণ: কলা পটাশিয়াম উপাদানের জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত। আর এই খনিজটি আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মূলত পটাশিয়াম হলো এক ধরনের ইলেকট্রোলাইট, যা নিয়মিত হৃদস্পন্দন, স্নায়ুকে কাজ করতে এবং পেশিগুলোকে সংকোচন করতে সহায়তা করে। এটি পুষ্টিকে কোষে স্থানান্তর করতে এবং কোষের বাইরের বর্জ্য স্থানান্তর করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া কলার পুষ্টিগুণ একটি প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধকের মতো কাজ করে, অতিরিক্ত সোডিয়াম এবং তরল শরীর থেকে বের করে দেয় আর শরীরে পানি ধরে রাখতে সহায়তা করে।
২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ: কলা পলিফেনিলিক নামে এক ধরনের পদার্থে সমৃদ্ধ; যেটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট প্রদাহ এবং কোষের ক্ষতি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, ধমনী শক্ত হওয়া, বয়স-সংক্রান্ত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন, নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার এবং অ্যালজেইমারস রোগে উপকারী ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া কলায় থাকা বিভিন্ন যৌগগুলো জেনেটিক ক্ষতি বা ডিএনএ আপস, রোগের ঝুঁকি কমায় এবং স্নায়বিক কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে।
৩. অন্যান্য পুষ্টিগুণ: কলাতে থাকা প্রতিরোধী স্টার্চ আমাদের শরীরে একটি অনন্য ধরনের কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে থাকে। আর জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রির তথ্যমতে, কলাতে পাওয়া আরেকটি প্রাকৃতিক পদার্থ ফ্রুক্টুলিগোস্যাকারাইডস প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। এর কারণে কলা শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণ করার ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভালো প্রোবায়োটিক সরবরাহ করে, যা হজমের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
৪. শক্তি সরবরাহ করে: কলা আমাদের শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে অনেক কার্যকরী। এ ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মলিকিউলার সায়েন্সের তথ্যমতে, কলা টেকসই শক্তির জন্য অন্যতম সেরা খাবার। কারণ কলাতে থাকা ফাইবার এবং ভিটামিন বি-৬ রক্তে শর্করার পরিমাণ এবং ইনস্যুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
আপনাকে অবশ্যই মন্তব্য করতে লগিন করতে হবে...
মন্তব্যসমূহ: