আজানের (الأذان) সূচনা ইসলামি ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। নিচে আজানের সূচনা কবে ও কিভাবে হয়েছিল তা বিস্তারিতভাবে দেয়া হলো -
★ সময়কালঃ-
এটা হিজরতের পর, খ্রিষ্টাব্দ ৬২২ সালে, অর্থাৎ হিজরি ১ম সালের দিকের ঘটনা - যখন নবী মুহাম্মাদ ﷺ মদীনায় আগমন করেন।
★ ঘটনার পটভূমি -
মদীনায় ইসলামি সমাজ প্রতিষ্ঠার পর মুসলমানদের নামাজের সময় ও জামাতে নামাজ পড়ার আহ্বান জানানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন পর্যন্ত নামাজের সময় ঘোষণা করার কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা ছিল না।
তখন সাহাবারা বিভিন্ন প্রস্তাব দেন, কেউ বলেন - ঘণ্টা বাজানো হোক (যেমন খ্রিস্টানরা করে)।
কেউ বলেন - আগুন জ্বালানো হোক (যেমন মজুসিরা তথা অগ্নিপূজকরা করে)।
কেউ বলেন - শিঙ্গা ফোঁকা হোক (যেমন ইহুদিরা করে)।
কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এগুলোর কোনোটিই পছন্দ করেন নি।
★ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ রা. এর স্বপ্ন
এরই মধ্যে এক রাতে সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ) স্বপ্নে দেখলেন একজন সাদা পোশাকধারী ব্যক্তি তাকে আজানের শব্দগুলো শেখাচ্ছেন। তিনি সকালে উঠে সেই স্বপ্নটি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে জানালেন।
তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, "নিশ্চয়ই এটি একটি সত্য স্বপ্ন।" "তুমি বিলালকে এই শব্দগুলো শেখাও, কারণ তার কণ্ঠস্বর তোমার চেয়ে অধিক জোরালো।"
(সূত্র: সুনান আবু দাউদ, হাদীস: ৪৯৮)
★ প্রথম আজান
তারপর হযরত বিলাল (রাঃ)-কে ডেকে আজানের শব্দগুলো শিখিয়ে দেওয়া হয়। তিনি আবদুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রাঃ)-এর শেখানো অনুযায়ী প্রথম আজান দেন। যখন এই শব্দ মদীনার আকাশে ভেসে ওঠে, তখন হযরত উমর (রাঃ) দৌড়ে এসে বলেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমিও ঠিক একই স্বপ্ন দেখেছি!” তখন নবীজী ﷺ আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং আজানকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেন। আর এভাবেই আজানের সূচনা হয়।