কৃষ্ণগহ্বর থেকে শক্তি আহরণের ধারণাটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়, তবে এটি এখনও তাত্ত্বিক পর্যায়ে রয়েছে। কৃষ্ণগহ্বর থেকে শক্তি আহরণের কয়েকটি পদ্ধতি নিচে আলোচনা করা হলো:
১. পেনরোজ প্রক্রিয়া: এই তত্ত্ব অনুসারে, কোনো বস্তু যদি কৃষ্ণগহ্বরের এরগোস্ফিয়ারে (কৃষ্ণগহ্বরের ঘূর্ণায়মান অঞ্চলের বাইরের স্তর) প্রবেশ করে এবং দুটি অংশে বিভক্ত হয়, তবে একটি অংশ কৃষ্ণগহ্বরে পতিত হবে এবং অন্য অংশটি অতিরিক্ত শক্তি নিয়ে বেরিয়ে আসবে। এই প্রক্রিয়াটি কৃষ্ণগহ্বরের ঘূর্ণন শক্তিকে কাজে লাগাতে পারে।
২. ব্ল্যান্ডফোর্ড-জ্নাজেক প্রক্রিয়া: এই তত্ত্বটি কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে থাকা চৌম্বক ক্ষেত্র এবং অ্যাক্রেশন ডিস্কের (কৃষ্ণগহ্বরে পতিত হওয়া পদার্থের ঘূর্ণায়মান ডিস্ক) মধ্যে মিথস্ক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। এই প্রক্রিয়া অনুসারে, চৌম্বক ক্ষেত্রটি অ্যাক্রেশন ডিস্ক থেকে শক্তি আহরণ করে এবং জেট আকারে নির্গত করে।
৩. হকিং রেডিয়েশন: স্টিফেন হকিংয়ের তত্ত্ব অনুসারে, কৃষ্ণগহ্বর ক্রমাগত কণা এবং প্রতি-কণা নির্গত করে, যা হকিং রেডিয়েশন নামে পরিচিত। এই রেডিয়েশন কৃষ্ণগহ্বরের ভর কমিয়ে দেয় এবং শক্তি নির্গত করে। তবে, এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ধীরে ধীরে ঘটে এবং ব্যবহারযোগ্য শক্তি আহরণ করতে অনেক সময় লাগবে।
৪. ডায়সন স্ফিয়ার: এটি একটি তাত্ত্বিক কাঠামো, যা একটি নক্ষত্র বা কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে তৈরি করা যেতে পারে। এই কাঠামোটি কৃষ্ণগহ্বর থেকে নির্গত শক্তি সংগ্রহ করে এবং ব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে।
ভবিষ্যতের জ্বালানি উৎস হিসেবে কৃষ্ণগহ্বর:
-
কৃষ্ণগহ্বর থেকে প্রচুর পরিমাণে শক্তি আহরণ করা সম্ভব, যা ভবিষ্যতের জ্বালানির চাহিদা মেটাতে পারে।
-
কৃষ্ণগহ্বর থেকে শক্তি আহরণ করা গেলে, এটি একটি পরিষ্কার এবং অসীম জ্বালানি উৎস হতে পারে।
-
তবে, কৃষ্ণগহ্বর থেকে শক্তি আহরণ করার প্রযুক্তি এখনও অনেক দূরে। এটি একটি অত্যন্ত জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং কাজ।
বর্তমানে, কৃষ্ণগহ্বর থেকে শক্তি আহরণ করার প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি আমাদের কাছে নেই। তবে, ভবিষ্যতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এটি সম্ভব হতে পারে।