জর্জ অরওয়েলের "1984" উপন্যাসের প্রধান দ্বন্দ্ব হলো স্বাধীনতা বনাম কর্তৃত্ব। এই দ্বন্দ্বটি উপন্যাসের মূল ধারণা এবং কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা এবং আত্মপরিচয়ের প্রতি রাষ্ট্রের দমনপীড়ন ও কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে একটি অবিরাম সংগ্রাম চলতে থাকে।
উপন্যাসের প্রধান চরিত্র উইন্সটন স্মিথ, প্যারালেলভাবে, একটি গোয়েন্দাগিরি সমাজে বসবাস করে, যেখানে "দল" বা সরকারের (যাকে "পার্টি" বলা হয়) কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি চলছে। সরকার প্রতিটি ব্যক্তির চিন্তা, কর্ম এবং কথাবার্তা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, এবং তারা সত্যকে এমনভাবে নির্মাণ করে যে বাস্তবতা কখনোই মানুষের মধ্যে স্বাধীনভাবে ধারণা নেওয়ার সুযোগ পায় না। এই সমাজে "দ্বৈত চিন্তা" নামে একটি ধারণা চালু রয়েছে, যেখানে মানুষকে এক সময়ে দুটি বিপরীত ধারণা বিশ্বাস করতে বাধ্য করা হয়, যেমন: "যুদ্ধে শান্তি" এবং "স্বাধীনতায় দাসত্ব"।
উইন্সটন এই শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে চায়, কিন্তু তার স্বাধীন চিন্তা ও অনুভূতিগুলির বিরুদ্ধে পার্টির অত্যন্ত শক্তিশালী যন্ত্রণা ও নজরদারি থাকে। তার এই বিদ্রোহের চেষ্টা এবং পার্টির দমন-পীড়নগুলি উপন্যাসের প্রধান দ্বন্দ্বকে চিত্রিত করে, যেখানে মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও পার্টির একনায়কতন্ত্রের মধ্যে তীব্র সংগ্রাম চলে।
উপন্যাসটি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে সমাজের সর্বগ্রাসী নিয়ন্ত্রণের প্রভাব এবং তার সাথে মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, চিন্তা ও অনুভূতির সম্পর্ককে পরীক্ষা করে, যা আজও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রসঙ্গে প্রাসঙ্গিক।