উইলিয়াম শেক্সপিয়রের "হ্যামলেট" একটি বিখ্যাত ট্র্যাজেডি নাটক। এর প্রধান বিষয়বস্তু হলো প্রতিশোধ, মৃত্যু, উন্মাদনা, এবং নৈতিক অবক্ষয়। নিচে এই নাটকের কয়েকটি মূল বিষয় সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
* পিতৃহত্যার প্রতিশোধ: নাটকের মূল কাহিনী হ্যামলেটের পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার উপর কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ডেনমার্কের যুবরাজ হ্যামলেটের বাবা, রাজা হ্যামলেট, তার ভাই ক্লডিয়াসের হাতে খুন হন। ক্লডিয়াস সিংহাসন দখল করে এবং হ্যামলেটের মা গারট্রুডকে বিয়ে করে। পিতার প্রেতাত্মা হ্যামলেটকে এই হত্যার কথা জানায় এবং প্রতিশোধ নিতে বলে। এই প্রতিশোধের তাড়নাই নাটকের প্রধান চালিকা শক্তি।
* মৃত্যু ও অস্তিত্বের সংকট: হ্যামলেট নাটকে মৃত্যুর ভাবনা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। হ্যামলেট পিতার মৃত্যু এবং নিজের জীবনের অনিশ্চয়তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত। তার বিখ্যাত "To be or not to be" সংলাপটি জীবনের অর্থ এবং মৃত্যুর অনিবার্যতা নিয়ে তার গভীর দার্শনিক চিন্তার প্রকাশ।
* উন্মাদনা ও দ্বিধা: প্রতিশোধ নেওয়ার দায়িত্ব পেয়ে হ্যামলেট দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সে নিশ্চিত হতে চায় যে প্রেতাত্মার কথা সত্য কিনা। এই কারণে সে পাগলের ভান করে এবং তার আচরণে অস্থিরতা দেখা যায়। তার এই উন্মাদনা আসল নাকি নকল, তা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে ধন্দ সৃষ্টি হয়।
* বিশ্বাসঘাতকতা ও নৈতিক অবক্ষয়: নাটকের চরিত্রগুলোতে বিশ্বাসঘাতকতা এবং নৈতিক অবক্ষয় দেখা যায়। ক্লডিয়াস তার ভাইকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করে, গারট্রুড তার স্বামীর মৃত্যুর পরপরই দেবরকে বিয়ে করে। হ্যামলেটের বন্ধুরাও তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। এই বিষয়গুলো নাটকের নৈতিক দিকটিকে তুলে ধরে।
* প্রেম ও বিচ্ছেদ: হ্যামলেটের ওফেলিয়ার প্রতি প্রেম এবং তাদের বিচ্ছেদ নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ওফেলিয়া হ্যামলেটের পাগলামি এবং পারিবারিক কলহের শিকার হয় এবং শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করে।
সংক্ষেপে, "হ্যামলেট" নাটকটি প্রতিশোধ, মৃত্যু, উন্মাদনা, এবং নৈতিক অবক্ষয়ের মতো জটিল বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। এটি মানব প্রকৃতির দুর্বলতা এবং জীবনের গভীরতা নিয়ে একটি শক্তিশালী
নাটক।