হস্তমৈথুন এবং পুরুষদের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব:
হস্তমৈথুন বা "মাস্টারবেশন" সাধারণত পুরুষদের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির কারণ হয় না, যদি এটি স্বাভাবিক এবং সীমিত পরিমাণে করা হয়। তবে, অতিরিক্ত হস্তমৈথুন বা এটি যখন অভ্যাসে পরিণত হয়, তখন কিছু শারীরিক এবং মানসিক প্রভাব পড়তে পারে, যেমন:
শারীরিক প্রভাব:
1. শক্তি হ্রাস: অতিরিক্ত হস্তমৈথুন শরীরের শক্তি কমিয়ে দিতে পারে।
2. সেক্সুয়াল ডিসফাংশন: একে একে বেশ কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌন কর্মক্ষমতা বা ইরেকটাইল ডিসফাংশনের কারণ হতে পারে, বিশেষত যদি এটি স্বাভাবিক যৌনজীবনের সাথে সম্পর্কিত না থাকে।
3. শারীরিক অস্বস্তি: অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে পেনিসে ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে।
মানসিক প্রভাব:
1. অত্যধিক নির্ভরশীলতা: যদি এটি অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে এটি মানসিকভাবে নির্ভরশীল করে তুলতে পারে, যা অন্য শারীরিক বা সামাজিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
2. অসন্তুষ্টি ও অপরাধবোধ: কিছু লোক মনে করতে পারেন যে হস্তমৈথুন করা তাদের জন্য অন্যায় বা অপমানজনক, বিশেষত ধর্মীয় বা সামাজিক মানদণ্ড অনুসারে।
---
ইসলামের দৃষ্টিতে হস্তমৈথুন:
ইসলামের দৃষ্টিতে হস্তমৈথুন সম্পর্কে মতামত কিছুটা বিভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত এটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে পরিহার করার জন্য বলা হয়েছে।
কোরআন ও হাদীসের আলোকে:
1. কোরআন: কোরআনে সরাসরি হস্তমৈথুনের কথা বলা হয়নি, তবে যৌন সম্পর্ক বা লজ্জাশীলতা বিষয়ক আয়াত রয়েছে, যেমন:
"তাদের লজ্জাস্থানগুলি রক্ষা করুন, তারা ছাড়া (যৌন সম্পর্ক) তাদের উপর অন্য কিছু নয়।" (সূরা আল-মুমিনুন: 5-7)
2. হাদীস:
হাদীসে কিছু স্থানীয় মন্তব্যে এটি বলা হয়েছে যে, অতিরিক্ত কামনা বা যৌন আকাঙ্ক্ষার নিয়ন্ত্রণ করতে হস্তমৈথুন করা জায়েজ হতে পারে যদি এটি অন্য কোন অশ্লীল কাজে পরিণত না হয়, যেমন:
"যদি তোমাদের মধ্যে কেউ যৌন আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তবে সিয়াম পালন করা উত্তম।" (সহীহ মুসলিম)
কিছু হাদীসে হস্তমৈথুনকে "ম্যাকরূহ" (অপ্রিয়, তবে নিষিদ্ধ নয়) হিসেবে বর্ণিত করা হয়েছে।
মতামত:
ইসলামের বিভিন্ন মাযহাব এবং ইসলামী স্কলারদের মধ্যে হস্তমৈথুন সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে। কিছু স্কলার এটি "মাকরূহ" বা "অপ্রিয়" হিসেবে বিবেচনা করেছেন, আবার কিছু স্কলার এটিকে "হারাম" বা নিষিদ্ধ বলে মনে করেন, বিশেষ করে যখন এটি পর্নোগ্রাফি বা অন্যান্য অশ্লীল কার্যকলাপের সাথে যুক্ত থাকে।
---
শেষের কথা :
হস্তমৈথুন, ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, কেবলমাত্র একটি সীমিত পরিমাণে করা হলে এবং এটি যদি কোনো অপ্রীতিকর অভ্যাসে পরিণত না হয়, তবে এটি ধর্মীয়ভাবে তেমন কোনো গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে, এর অতিরিক্ত ব্যবহার শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতি করতে পারে এবং এটি ইসলামের দৃষ্টিতে সম্ভবত অপ্রিয় বা নিষিদ্ধ হতে পারে, বিশেষত যদি এটি ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক হয়।