ব্ল্যাক হোল হল একটি মহাজাগতিক বস্তু যা এতটা ঘন এবং শক্তিশালী গুরত্বাকর্ষণ ক্ষেত্র ধারণ করে যে, এর কাছ থেকে কোন কিছু, এমনকি আলোও পালাতে পারে না। এটি সাধারণত একটি তারার মৃত্যুর ফলে গঠিত হয়। ব্ল্যাক হোল গঠনের প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:
১. তারার জীবনচক্র
ব্ল্যাক হোল সাধারণত একটি খুব বড় তারার মৃত্যুর পর সৃষ্টি হয়। এই তারাগুলোর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তাদের নিজের কোরে বিকিরণ শক্তি থেকে আর্দ্রতার সাথে বিরোধ করে, কিন্তু এক সময় তারা তাদের ফুুল শক্তি খরচ করে ফেলে।
২. নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়া
তারার কেন্দ্রীয় অংশে নিউক্লিয়ার ফিউশন প্রক্রিয়া চলতে থাকে, যেখানে হাইড্রোজেন পরমাণু শক্তির জন্য ফিউজনের মাধ্যমে হিলিয়াম পরিণত হয়। তার পর, যদি তারার ভর যথেষ্ট বড় হয়, তাহলে হিলিয়ামের পর নিউক্লিয়াস আরও ভারী উপাদানে পরিণত হয়, যেমন কার্বন এবং অক্সিজেন।
৩. স্টেলার কোলাপ্স
এক সময়, তারার অভ্যন্তরীণ শক্তির উৎপাদন কমে গেলে, তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তার নিজস্ব কোরকে সংকুচিত করতে শুরু করে। এই সংকোচনের কারণে তারার অভ্যন্তরীণ চাপ এতটা বৃদ্ধি পায় যে, এটি একটি গভীর এবং ঘন অবস্থায় পৌঁছায়।
৪. সুপারনোভা বা তারার বিস্ফোরণ
বড় মাপের তারার ক্ষেত্রে, যখন এটি পর্যাপ্ত পরিমাণে সংকুচিত হয়, তখন এটি একটি বিশাল বিস্ফোরণ ঘটায়, যার নাম সুপারনোভা। এই বিস্ফোরণে তারার বাইরের স্তরগুলো উড়ে যায়, কিন্তু তার কেন্দ্রস্থলে ভারী ভর থাকার কারণে এটি অবশেষে সংকুচিত হয়ে একটি ব্ল্যাক হোল তৈরি করে।
৫. ব্ল্যাক হোল গঠন
এই সংকুচিত ভরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে মাধ্যাকর্ষণ এত শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে, এটি "সিঙ্গুলারিটি" নামক একটি স্থানে পৌঁছায়। এখানে একমাত্র গুরত্বাকর্ষণ কাজ করে, এবং তার চারপাশের এলাকা বা "ইভেন্ট হরাইজন" এমন একটি সীমা তৈরি হয়, যেখান থেকে কোন কিছুই, এমনকি আলোও পালাতে পারে না।
এভাবে ব্ল্যাক হোল গঠিত হয় এবং এটি মহাকাশে স্থায়ীভাবে অস্তিত্ব বজায় রাখে যতক্ষণ না এর সঙ্গে অন্য কোন বস্তু বা মহাজাগতিক ঘটনাবলী সংঘটিত হয়।