হাইড্রোফোন একটি সাউন্ড সেন্সিং ডিভাইস যা পানির নিচে শব্দ (সাউন্ড ওয়েভ) ধরতে ব্যবহৃত হয়। এটি প্রধানত সামুদ্রিক বা জলবিদ্যুৎ গবেষণা, সাবমেরিন যোগাযোগ, মাছ ধরার কাজে বা পানির নিচে ঘটে যাওয়া অন্যান্য কার্যকলাপের বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়। হাইড্রোফোনের মাধ্যমে পানির নিচে সৃষ্ট শব্দের তীব্রতা, প্রকৃতি, এবং উৎস শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
হাইড্রোফোন কীভাবে কাজ করে?
1. শব্দের সিগন্যাল গ্রহন: পানির নিচে কোনো শব্দ বা সাউন্ড ওয়েভ উৎপন্ন হলে, সেই সিগন্যালটি হাইড্রোফোনের সেন্সর (সাধারণত পিজোইলেকট্রিক সেন্সর) দ্বারা সনাক্ত হয়। শব্দ তরঙ্গ পানির মধ্যে চলতে থাকে এবং হাইড্রোফোন সেগুলি শোষণ করে।
2. পিজোইলেকট্রিক এফেক্ট: হাইড্রোফোনের প্রধান অংশ হলো পিজোইলেকট্রিক উপাদান, যা শব্দ তরঙ্গের চাপ পরিবর্তনকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে। যখন শব্দ তরঙ্গ পানির মধ্যে প্রবাহিত হয়, তখন পিজোইলেকট্রিক ক্রিস্টাল তার উপর চাপ অনুভব করে এবং বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হয়।
3. বৈদ্যুতিক সংকেতের রূপান্তর: পিজোইলেকট্রিক উপাদান থেকে প্রাপ্ত বৈদ্যুতিক সংকেতটি একটি আম্পলিফায়ার বা সিগন্যাল প্রসেসর দ্বারা বিশ্লেষিত এবং শক্তি বাড়ানো হয়। এটি পরবর্তী সময়ে এক্সটার্নাল সিস্টেম বা রেকর্ডিং যন্ত্রে পাঠানো হয়।
4. সিগন্যাল বিশ্লেষণ: হাইড্রোফোনের মাধ্যমে প্রাপ্ত বৈদ্যুতিক সংকেত বিশ্লেষণ করে শব্দের উৎস, প্রকৃতি, দূরত্ব, তীব্রতা এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করা হয়।
হাইড্রোফোনের ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ:
সমুদ্র গবেষণা: সামুদ্রিক জীবজন্তু (যেমন তিমি) বা অন্যান্য সামুদ্রিক জীবনবৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ করতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়।
সাবমেরিন যোগাযোগ: সাবমেরিনের মধ্যে এবং বাহিরের সাউন্ড সিগন্যাল যোগাযোগের জন্য হাইড্রোফোন ব্যবহৃত হয়।
মৎস শিকার: মাছ ধরার জন্য পানির নিচের শব্দের তীব্রতা বা পানির অবস্থান জানার জন্য।
সামরিক উদ্দেশ্য: সাবমেরিন বা যুদ্ধজাহাজের সাউন্ড সিগন্যাল শনাক্ত করতে, হাইড্রোফোন ব্যবহৃত হয়।
এভাবে হাইড্রোফোন শব্দের সিগন্যাল গ্রহণ করে, বিশ্লেষণ এবং ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে
উপযোগী তথ্য প্রদান করে।