অ্যামাইটোসিস বিভাজন হল এক ধরনের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া, যাতে একটি মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম কোনো জটিল মাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াই সরাসরি বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে। অ্যামাইটোসিস হল জীবদেহের এক ধরনের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া, যা প্রধানত নিম্ন শ্রেনির জীবে (যেমন- এক কোষী প্রাণী - ব্যাক্টেরিয়া, ইস্ট, অ্যামিবা ইত্যাদি) দেখা যায়। একে ক্যারিওস্টেনোসিস বা প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজনও বলা হয়। একে অনেক সময় দ্বিবিভাজন বা বাডিংও(binary fission) বলা হয়।
অ্যামাইটোসিস বিভাজনের পর্যায়গুলি হল:
-
প্রথম পর্যায় (প্রোফেজ): এই পর্যায়ে নিউক্লিয়াস ঘন হয় এবং ক্রোমাটিন সূত্রকগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ক্রোমোজোমগুলি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যায়।
-
দ্বিতীয় পর্যায় (মেটাফেজ): এই পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলি মাঝ বরাবর বিন্যস্ত হয় এবং স্পিন্ডল তন্তুর সাহায্যে মাইটোটিক বিভাজনের মতোই কোষের কেন্দ্রে সংযুক্ত হয়।
-
তৃতীয় পর্যায় (অ্যানাফেজ): এই পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলি স্পিন্ডল তন্তুর সাহায্যে দুটি বিপরীত মেরুতে চলে যায়।
-
চতুর্থ পর্যায় (টেলোফেজ): এই পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলি দীর্ঘ ও পাতলা হয়ে যায় এবং নিউক্লিয়াস ভেঙে যায়। সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়।
অ্যামাইটোসিস বিভাজনের বৈশিষ্ট্যগুলি হল:
-
এটি একটি সরল ধরনের কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া।
-
এটিতে স্পিন্ডল তন্তুর কোনো ভূমিকা নেই।
-
এতে ক্রোমোজোমগুলির কোনো পুনর্বিন্যাস ঘটে না।
-
এতে অ্যালিলগুলির অসম বণ্টন ঘটে।
অ্যামাইটোসিস বিভাজনের গুরুত্ব হল:
-
এটি অযৌন জননের মাধ্যমে জীবের বংশবৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
-
এটি জীবের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে।
-
এটি জীবের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলির পরিবর্তনে সাহায্য করে।
অ্যামাইটোসিস বিভাজনের কিছু উদাহরণ হল:
-
ব্যাকটেরিয়ার বিভাজন
-
ইস্টের বিভাজন
-
অ্যামিবার বিভাজন
-
স্পোরোফাইটের বিভাজন
অ্যামাইটোসিস বিভাজনের কিছু সীমাবদ্ধতা হল:
-
এটিতে ক্রোমোজোমগুলির পুনর্বিন্যাস ঘটে না।
-
এতে অ্যালিলগুলির অসম বণ্টন ঘটে।
-
এটিতে জটিল জীবে কোষ বিভাজনের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় না।