পিরিয়ড ডেট পার হয়ে গেলে কখন ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন তা নির্ভর করে বিভিন্ন কারণের উপর। সাধারণত, পিরিয়ডের দেরি হওয়া সবসময় গুরুতর সমস্যা বোঝায় না, তবে কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
১. সাধারণ পরিস্থিতিতে ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন নেই যদি:
-
১-২ সপ্তাহের জন্য দেরি হয়।
-
সাময়িক স্ট্রেস, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি, বা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এর কারণে পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে।
-
গর্ভধারণের সম্ভাবনা নেই এবং আগে থেকে মাসিক অনিয়মিত থাকার ইতিহাস আছে।
২. জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তার দেখাতে হবে যদি:
ক. গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে:
-
পিরিয়ড ডেট পার হওয়ার পর গর্ভধারণের লক্ষণ:
-
বমিভাব বা বমি।
-
স্তন ফোলা বা কোমলতা।
-
ক্লান্তি বা ঘুম বেশি আসা।
-
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
-
গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে হোম প্রেগন্যান্সি টেস্ট করুন।
-
টেস্টে পজিটিভ হলে ডাক্তার দেখান।
খ. গর্ভধারণ না হলেও সমস্যার লক্ষণ থাকলে:
-
তীব্র ব্যথা বা পেটের নিচের অংশে চাপ:
-
ইক্টোপিক প্রেগন্যান্সির (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) লক্ষণ হতে পারে।
-
দীর্ঘমেয়াদী অনিয়মিত মাসিক:
-
হরমোনাল ভারসাম্যহীনতা, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) বা থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
-
রক্তক্ষরণ বা দাগ লাগা (Spotting):
-
অসম্পূর্ণ গর্ভপাত বা জরায়ুর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
-
অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা চুল পড়া:
-
PCOS বা হরমোনাল সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
-
রক্তাল্পতা বা দুর্বলতা:
-
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা দীর্ঘদিন মাসিক না হওয়ার কারণে রক্তস্বল্পতা হতে পারে।
গ. দীর্ঘ সময় মাসিক না হলে:
-
যদি ৩ মাসের বেশি সময় পিরিয়ড না হয় এবং গর্ভধারণ না হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তার দেখান।
-
এটি প্রজনন সমস্যার (Infertility) লক্ষণ হতে পারে।
৩. কী পরীক্ষা দরকার হতে পারে?
ডাক্তার সাধারণত নিম্নলিখিত পরীক্ষা করে থাকেন—
-
প্রেগন্যান্সি টেস্ট (Blood বা Urine Test): গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে।
-
আল্ট্রাসাউন্ড: জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের অবস্থা যাচাই করতে।
-
হরমোন পরীক্ষা: থাইরয়েড, প্রোল্যাকটিন, এস্ট্রোজেন, এবং প্রজেস্টেরনের ভারসাম্য নির্ণয় করতে।
-
প্যাপ স্মিয়ার: জরায়ুর ক্যান্সারের সম্ভাবনা পরীক্ষা করতে।
৪. উপসংহার:
পিরিয়ড ডেট পার হওয়ার পর যদি গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে বা অন্যান্য অসুবিধাজনক লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত ডাক্তার দেখানো উচিত। স্বাভাবিক দেরি হলে সাধারণত চিন্তার কারণ নেই, তবে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করান।