মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ (Fish Processing) হলো মাছের তাজা অবস্থার সংরক্ষণ এবং ভোক্তাদের জন্য উপযোগী খাদ্য হিসেবে পরিণত করার প্রক্রিয়া। এতে মাছের গুণগত মান বজায় রেখে বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যাতে তা দীর্ঘ সময় ধরে সংরক্ষণ করা যায় এবং বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হয়। মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, যেমন:
1. মাছ পরিষ্কারকরণ: মাছটি ধুয়ে পরিষ্কার করা, তার শিরা, কাঁটা, পেটের অংশ, মলত্যাগ ইত্যাদি সরিয়ে ফেলা হয়।
2. গরম বা ঠাণ্ডা পরিবেশে সংরক্ষণ: মাছ সংরক্ষণে দুটি প্রধান পদ্ধতি রয়েছে:
ফ্রিজিং বা ঠাণ্ডা সংরক্ষণ: মাছকে শীতল বা বরফ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়, যাতে এর তাজা গুণগত মান রক্ষা হয়।
শুষ্ক সংরক্ষণ: মাছ শুকিয়ে রাখা হয় (ড্রাইফিশ) যাতে পানি হারিয়ে মাছের অর্ধ-অবস্থা বা শুকনো হয়ে থাকে।
3. মাছের টিনজাতকরণ (Canning): মাছকে টিন বা কাচের বয়ামে বন্ধ করে তাপ দিয়ে রান্না করে, যাতে এটি দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায়।
4. নুন বা লবণ ব্যবহারে সংরক্ষণ: মাছকে লবণ দিয়ে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। লবণ মাছের আর্দ্রতা কমিয়ে তার সংরক্ষণ সময় বাড়ায়। এটি সাধারণত শুকনো বা মিষ্টি মাছের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
5. ধোঁকা বা স্মোকিং: মাছকে ধোঁকায় রাখা হয়, যা তাকে বিশেষ স্বাদ ও গন্ধ প্রদান করে এবং দীর্ঘকাল সংরক্ষণ করতে সহায়ক হয়।
6. ফ্রোজেন বা আইসক্রিমিং: মাছকে ঠাণ্ডা করে বরফে সংরক্ষণ করা হয় যাতে তার পুষ্টি ও গুণমান অক্ষুণ্ণ থাকে।
7. প্রসেসড মাছের পণ্য তৈরি: মাছ প্রক্রিয়াজাত করার পর বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করা যায়, যেমন মাছের কাটা টুকরা, মাছের ফিলেট, মাছের পেস্ট, মাছের সসেজ বা কেবাব ইত্যাদি।
8. মাছের মাংসের প্যাকেটিং: মাছের মাংস প্যাকেটিং করে সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হয়, যাতে তা ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর আগে তাজা থাকে।
মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের মূল লক্ষ্য হলো মাছের গুণগত মান ও পুষ্টিগুণ বজায় রেখে তাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা এবং বাজারে বিক্রয়ের উপযোগী করা।