116 বার দেখা হয়েছে
"দৈনন্দিন দুয়া" বিভাগে করেছেন
কুদৃষ্টির চিকিৎসা কি? 

1 টি উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন

কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকার কিছু উপায়ঃ- 

১. কুদৃষ্টি বাঁচতে হলে পথে-ঘাটে চলার সময় দৃষ্টিকে নিচু রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এটি দৃষ্টিকে হেফাজত করার কুরআনী পথ্য।

২. কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকার একটি উত্তম পন্থা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করে নেয়া। পরনারীর কাছে যা আছে, নিজ স্ত্রীর কাছেও তা-ই রয়েছে। তাই নিজ স্ত্রীর দিকে ভালোবাসার নজরে দেখবে, এর ওপর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করবে। তাহলে কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়ে যাবে।

৩. সর্বদা যিকিরের হালতে থাকার দ্বারা শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ফলে দৃষ্টিকে সংযত রাখা সম্ভব হয়।

৪. মনের মধ্যে সর্বদা এই খেয়াল রাখবে যে, আমার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা আমাকে দেখছেন। এর ফলে দৃষ্টি নিজ থেকেই নত হয়ে যাবে। কোনো নারীর সাথে থাকা তার বাবা, ভাই, স্বামী যেমন আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমরা সেই নারীর দিকে কুদৃষ্টিতে দেখতে পারি না, তেমনই আমরা যখন এ কথা স্মরণ রাখব যে, আল্লাহ আমাকে দেখছেন, তখন পরনারী থেকে নিজের দৃষ্টিকে সংযত রাখতে পারব। সেই সাথে চোখকে আল্লাহর দেয়া আমানত মনে করবে এবং এর অপব্যবহার থেকে বেঁচে থাকবে।

৫. এ কথা মনে করবে যে, আমি যেমন আমার মা, বোন, স্ত্রীর দিকে অন্য কারও কুদৃষ্টি দেয়াকে পছন্দ করি না, তেমনই অন্যরাও এটা পছন্দ করে না যে, আমি তাদের মা, বোন, স্ত্রী বা অন্য কোনো নিকটাত্মীয়ের দিকে কুদৃষ্টি নিক্ষেপ করি।

৬. প্রতিবার কুদৃষ্টির জন্য নিজের ওপর কোনো শাস্তি নির্ধারণ করে নেবে। কোনো আর্থিক বা শারীরিক দণ্ড বা নির্দিষ্ট পরিমাণ কোনো নফল আমল নির্ধারণ করার দ্বারা নফস নিজের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কোনো সুশ্রী নারীর দিকে দৃষ্টি পড়লে তার নানাবিধ ত্রুটি নিয়ে ভাববে ও জান্নাতী হুর লাভের আশা করবে।

৭. কুদৃষ্টি হতে পারে এমন সকল স্থান ও মাধ্যম থেকে বেঁচে থাকবে। নিজ স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে। তাকে মন ভরে দেখে নেবে, যাতে অন্যদের দেখার প্রয়োজন না পড়ে। পরনারীদের থেকে নিজেকে নির্লোভ করে নেবে। এমন ভাববে যে, পরনারীর কাছে আমার কোনো প্রয়োজন নেই, আমি তার প্রতি লালায়িত নই, সুতরাং তার দিকে আমি কেন তাকাব?

৮. সর্বোপরি নিজ প্রবৃত্তির সাথে সর্বদা বিতর্ক করতে থাকবে, আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভ থেকে বঞ্চিত হবার ভয় করবে। নিজ চেষ্টা অব্যাহত রাখলে ইনশাআল্লাহ এর মাধ্যমে কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে। বান্দা চেষ্টা করলে আল্লাহ তাআলাই তা পূর্ণতায় পৌঁছে দেবেন।

যাবতীয় অশ্লীলতা, বেলেল্লাপনা ও ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ তাআলা নারীদের জন্য পর্দার বিধান অবতীর্ণ করেছেন। ইসলামী শরীয়তে নামায, রোযার মতো পর্দার বিধানকেও ফরজ করা হয়েছে। পর্দার মাধ্যমে নারীকে পরপুরুষ থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ করে দেয়া হয়েছে। শরয়ী পর্দার তিনটি স্তর রয়েছে। যথাঃ- 

১. নারীদের জন্য পর্দার সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি হচ্ছে ঘরের চার দেওয়ারিতে অবস্থান করা। নিজ ঘরেই যাবতীয় কাজকর্ম সম্পন্ন করা। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া। পরপুরুষের সামনেই না আসা। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেনঃ- 

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْاُولٰى 

“তোমরা নিজ গৃহে অবস্থান করো এবং জাহেলী যুগের মতো (পর- পুরুষকে) সাজসজ্জা প্রদর্শন করে বেড়িয়ো না।” সূরা আহযাব, আয়াত - ৩৩। 

২. একান্ত অপারগ হয়ে যদি ঘরের বাইরে বের হতেই হয়, তাহলে গায়ে বোরকা বা বড় চাদর দ্বারা ভালোভাবে নিজেকে ঢেকে নেবে। সম্পূর্ণ পর্দা অবলম্বন করে বাইরে বের হবে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ-  يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيْبِهِنَّ

“তারা যেন তাদের চাদরের অংশ নিজেদের ওপর টেনে নেয়।" সূরা আহযাব, আয়াত - ৫৯। 

৩. পর্দার সর্বশেষ স্তর হচ্ছে, নারী একান্ত অপারগতাবশত ঘর থেকে বের হয় এবং চাদর বা বোরকা এমনভাবে পরে যে, তার হাত-পায়ের তালু ও চেহারা খোলা থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ-

وَلَا يُبْدِيْنَ زِيْنَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا

“তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে।” সূরা নূর, আয়াত - ৩১। 

তবে এটিও তখন জায়েয হবে যখন ফিতনা ছড়াবার আশঙ্কা না থাকে। যদি ফিতনার আশঙ্কা থাকে তাহলে এ ব্যাপারে ফুকাহায়ে কেরাম সকলেই একমত যে, তখন এ অঙ্গও খোলা রাখা জায়েয হবে না। বর্তমানে কেউ কেউ এ কথা দাবি করে যে, চেহারা পর্দার অন্তর্ভুক্ত নয়। অথচ রূপ ও সৌন্দর্যের কেন্দ্রই হচ্ছে চেহারা। সুতরাং শুধু চিকিৎসা ও আদালতে শরয়ী সাক্ষ্য প্রদান ছাড়া কোনো অবস্থাতেই চেহারা উন্মুক্ত রাখা জায়েয হবে না। সেই সাথে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে, নারীর জন্য খোলা জায়েয মানেই পুরুষের জন্য তাকে দেখা বৈধ হয়ে যাবে না; বরং পুরুষের জন্য স্বীয় দৃষ্টি অবনত রাখার নির্দেশ তখনো বলবৎ থাকবে।

বর্তমান সমাজে পর্দার বিধানকে উপেক্ষা করার ভয়াবহ পরিণতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই সমাজকে অশ্লীলতামুক্ত রাখতে হলে এখনই পর্দা পালনের প্রতি যত্নবান হতে হবে।

প্রবৃত্তি ও শয়তান মানুষের চিরশত্রু। এদের প্রশ্রয় দিলে, এরা ধীরে ধীরে ভালো ও পুণ্যবান ব্যক্তিকেও গুনাহে লিপ্ত করে দেয়। তাই প্রবৃত্তি ও শয়তানকে কোনো ধরনের সুযোগই দেয়া যাবে না। আর নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার দ্বারা প্রবৃত্তি ও শয়তান সুযোগ পেয়ে যায়। এটি স্বাভাবিক যে, যেখানে গুনাহের সুযোগ থাকবে সেখানে একদিন না একদিন গুনাহ হয়েই যাবে। তাই সতর্কতার দাবি হচ্ছে, যে পথে চলতে মানা সে পথের ধারে-কাছেও না যাওয়া। কেননা সতর্কতা অবলম্বন করা লজ্জিত হওয়া থেকে উত্তম। তাই নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে বন্ধ করতে হবে। শরীয়তে এর ওপর অনেক বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। 

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
18 সেপ্টেম্বর, 2023 "ফসল" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন M.S.C_Safwana
1 টি উত্তর
0 টি উত্তর
18 আগস্ট, 2021 "রোগ ও চিকিৎসা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
1 ডিসেম্বর, 2022 "যৌন সমস্যা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Rohan
1 টি উত্তর
2 টি উত্তর
21 আগস্ট, 2021 "স্বাস্থ্য টিপস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন No.1nir¤B
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
6 এপ্রিল, 2021 "যৌন সমস্যা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Sharif45
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর

34,053 টি প্রশ্ন

33,007 টি উত্তর

1,576 টি মন্তব্য

3,212 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
32 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 32 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 26777
গতকাল ভিজিট : 46623
সর্বমোট ভিজিট : 42763838
  1. MuntasirMahmud

    302 পয়েন্ট

    60 টি উত্তর

    2 টি গ্রশ্ন

  2. Limon54

    105 পয়েন্ট

    20 টি উত্তর

    5 টি গ্রশ্ন

  3. Kuddus

    85 পয়েন্ট

    17 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  4. TeddyAhsan

    71 পয়েন্ট

    4 টি উত্তর

    1 টি গ্রশ্ন

  5. Sijan855

    68 পয়েন্ট

    1 টি উত্তর

    13 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...