আমরা সবাই ভেবে থাকি, ডাঙায় শব্দ হয়, পানির নিচের জগৎ নীরব। কিন্তু এটা একদমই ভুল ধারণা। ডাঙার জীবজন্তুর মতো পানির নিচের মাছ, অন্যান্য জলজ প্রাণীও শব্দ করে, তারা ভাবের আদানপ্রদান করে।মাছ শুনতে পায় কি না এই প্রশ্ন এলে আরো একটা প্রশ্ন জাগে মনের ভিতর, মাছের কি তবে কান আছে? থাকলেও কোথায়, আমরা তো দেখতে পাইনা।প্রথমত শ্রবণের উপর ভিত্তি করে স্বাদু পানির মাছকে দুটো ভাগে ভাগ করা হয়-১.শ্রবণক্ষম(সাইপ্রিনিড যেমন-কার্প) ২.শ্রবণঅক্ষম।
অন্যান্য জীবজন্তুর মতো শ্রবণক্ষম মাছের কান দেখা যায় না,কারন মাছের কান মাছের মাথার দু-পাশে ছোট ছোট ছিদ্র আছে এবং সে-ছিদ্রগুলো মাথার নিচে অভ্যন্তরীণ কানের সাথে মিলেছে।প্রাণীর কানের এক অংশ বাইরে থাকে এবং সেই অংশ শব্দগ্রহণে সাহায্য করে যদিও শ্রবণক্ষম মাছের কানের গঠন ওরকম নয়, তবুও মাছ বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানির নিচে শব্দ শুনে। মাছের শরীরের দু-পাশে সারিবদ্ধভাবে ছোট ছোট ছিদ্র আছে। এসব ছিদ্র শব্দ এবং পানির চাপের তারতম্য গ্রহন করে মাথায় সংকেত পাঠায়। এসব ছিদ্রকে পার্শ্বছিদ্র বা ল্যাটারাল পোরস বলে। মাছের মাথায় ওটোলিথ নামে তিনটি হাড় আছে। এই হাড়গুলো পেটে বায়ুথলির সাথে যুক্ত। বায়ুথলি মাছকে পানিতে ভাসতে সহায়তা করে থাকে। আশেপাশের যে-কোনে শব্দ এই থলি সংগ্রহ করে অনেক গুন বাড়িয়ে মাথার ঐ ছোট হাড়ের ভিতর দিয়ে কানে পাঠিয়ে দেয়। ফলে মাছ তার আশেপাশের পরিবেশ সম্বন্ধে অবগত হয়ে যায়। অধিকন্তু মাছও শব্দের দিক নির্ধারণ করতে পারে কারণ তাদের শরীরের দুই পাশে দুটি কান এবং একটি পার্শ্বীয় রেখা রয়েছে।মাছের কথা আমরা শুনি না, কিন্তু মাছ ঠিকই আমাদের কথা শুনে। এইদিক দিয়ে মাছ আমাদের থেকে এগিয়ে।
শ্রবণঅক্ষম মাছগুলি প্রায়শই দৃষ্টি বিশেষজ্ঞ হয় যা গৌণ অর্থে তাদের শ্রবণের উপর নির্ভর করে। সাম্প্রতিক একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে শ্রবণক্ষম বিশেষ করে নৌকা ট্র্যাফিকের শব্দ দ্বারা খারাপভাবে প্রভাবিত হয়। অতিরিক্ত মাত্রার শব্দ তাদের খাওয়ানোর ক্ষমতাকে হস্তক্ষেপ করে, যেখানে শ্রবণঅক্ষমরা প্রভাবিত হয়নি।