ক) সূরা আহযাবের যে আয়াত (আয়াত : ৫৯) ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। তার অর্থ আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. ও মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন রা., আবীদা সালমানী রাহ. চোখ ব্যতীত পুরো চেহারা ঢেকে রাখা।
ইমাম আবু বকর রাযী আলজাসসাস রাহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন- এই আয়াত থেকে প্রমাণ হয়, বাইরে বের হওয়ার সময় পর পুরুষের দৃষ্টি থেকে নারীর মুখমন্ডল আবৃত রাখা এবং পর্দানশীন পবিত্র নারীর বেশ গ্রহণ করা অপরিহার্য। যাতে দুষ্ট লোকেরা তাদের ব্যাপারে উৎসাহী না হয়।-আহকামুল কুরআন, জাসসাস ৩/৩৭২ আরো দেখুন : আলকাশশাফ, যামাখশারী ৩/৩৭৪; তাফসীরে বায়যাবী ২/২৮০; তাফসীরে জালালাইন ৫৬০; তাফসীরে গারাইবুল কুরআন ওয়া রাগাইবুল ফুরকান ৫/৪৭৬; আযওয়াউল বয়ান, মুহাম্মাদ আলআমীন শানকীতী ৬/৫৮৬
২. হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘ইহরামের হালতে মেয়েরা যেন নেকাব ও দস্তানা ব্যবহার না করে।’-সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৩৮
এ থেকে বোঝা যায়, সাহাবায়ে কেরামের যুগে মেয়েরা তাদের হাত ও মুখ আবৃত রাখতেন। এ কারণে ইহরামের সময় নেকাব ও দস্তানা না পরার আদেশ করতে হয়েছে।
৩. উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. তাঁর হজ্বের বিবরণে বলেছেন, সফরের হালতে ইহরামের কারণে তারা নেকাব খোলা রাখতেন, কিন্তু যখন পুরুষরা নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তখন তারা মুখমন্ডল আবৃত করে ফেলতেন। তারা চলে যাওয়ার পর নেকাব তুলে ফেলতেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ১৮৩৩; সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৭৫৭
আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রাহ. বলেন-সঠিকতর সিদ্ধান্ত এই যে, নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে দুই হাত, দুই পা ও মুখমন্ডল খোলা রাখার অবকাশ নেই।-মাজমূআতুল ফাতাওয়া ২২/১১৪
এসব বিবরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, পর পুরুষের দৃষ্টি থেকে মুখমন্ডল আবৃত রাখতে হবে। ইবনুল কাইয়েম রাহ. বলেন, নারী নামায আদায়ের সময় দুই হাত ও মুখমন্ডল খোলা রাখতে পারেন, কিন্তু এভাবে বাজারে ও লোকের সমাগমস্থলে যাওয়ার অবকাশ নেই।-ই’লামুল মুয়াক্কিয়ীন ২/৪৭
বর্তমান সময়ের আরব শায়খদের মাঝে শায়খ ইবনে বায রাহ., শায়খ উছাইমীন ও শায়খ ইবনে জিবরীনও একই ফতোয়া দিয়েছেন। দেখুন : রিসালাতুন ফিলহিজাবি ওয়াসসুফূর, পৃ.১৯; ফাতাওয়া উলামাইল বালাদিল হারাম পৃ. ১১৬৯
বোরকা যেহেতু বাইরে বের হওয়ার সময়ই পরা হয় তাই বোরকা এমনভাবে পরা চাই যা দ্বারা মুখমন্ডল আবৃত থাকে।]