বিয়ের পর ছেলেদের মোটা হয়ে যাওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। এটি সাধারণত শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের ফলস্বরূপ হতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ কারণ দেওয়া হলো:
১. খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন:
বিয়ের পর অনেক সময় পুরুষেরা খাবারের পরিমাণ বা ধরণ পরিবর্তন করে। অনেকেই বাইরে খাওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে দেন বা অতিরিক্ত মিষ্টি ও তৈলাক্ত খাবার খেতে শুরু করেন। এটি তাদের ওজন বাড়ানোর অন্যতম কারণ হতে পারে।
২. মানসিক চাপ বা আরামদায়ক জীবনযাত্রা:
বিয়ের পর অনেক সময় পুরুষেরা কম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং শারীরিক কার্যকলাপে আগ্রহ কমিয়ে দেন। দাম্পত্য জীবনে অস্থিরতার পরিবর্তে এক ধরনের আরামদায়ক বা স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবন শুরু হয়, যা শারীরিক কার্যকলাপ কমিয়ে দিয়ে স্থূলতা বাড়িয়ে দেয়।
৩. পরিবারের সঙ্গ ও সামাজিক জীবনের পরিবর্তন:
বিয়ের পর অনেক সময় সমাজিক অনুষ্ঠানে এবং পারিবারিক আড্ডায় বেশি খাওয়া হয়ে থাকে, বিশেষ করে তরকারি, মিষ্টান্ন ও অন্যান্য বাড়তি খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
৪. আলসেমি বা শারীরিক কার্যকলাপ কমে যাওয়া:
একসাথে থাকার ফলে অনেক পুরুষের মধ্যে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যেতে পারে। আগে যখন তারা এককভাবে থাকতেন, তখন নিয়মিত হাঁটা, খেলাধুলা বা ব্যায়াম করতেন, কিন্তু বিয়ের পর পরিবারের সঙ্গে থাকার ফলে সেই নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ কমে যেতে পারে।
৫. হরমোনাল পরিবর্তন:
বিয়ের পর পুরুষদের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন হতে পারে, যা তাদের মেটাবলিজমকে ধীর করে দেয়। এছাড়া, কিছু পুরুষ দাম্পত্য জীবনে স্ট্রেস বা মানসিক চাপের শিকার হন, যা তাদের শরীরের হরমোনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং ওজন বাড়তে সাহায্য করে।
৬. প্রেগনেন্সি ও বাচ্চা:
কিছু পুরুষ বাচ্চা হওয়ার পর মা-বাবার দায়িত্ব এবং নতুন জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে বেশি খাওয়া শুরু করেন বা কম শারীরিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন, যা তাদের ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
৭. অনেক সময় খাবারের প্রতি কম যত্ন:
পুরুষেরা অনেক সময় খাবারের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন এবং সহজলভ্য বা দ্রুত প্রস্তুত খাবার (যেমন ফাস্ট ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার) খেতে শুরু করেন, যা তাদের ওজন বাড়ানোর প্রধান কারণ।
৮. দাম্পত্য জীবনে আরামদায়ক মানসিকতা:
কিছু পুরুষের মধ্যে বিয়ের পর আরামদায়ক মানসিকতা তৈরি হয়, তারা নিজেদের শারীরিক আকৃতি নিয়ে খুব চিন্তা করেন না। বিশেষ করে, বিয়ের পর শারীরিক আকৃতি বা ফিটনেস নিয়ে অতিরিক্ত সচেতনতা কমে যায়।
এইসব কারণগুলি সম্মিলিতভাবে পুরুষদের ওজন বাড়ানোর কারণ হতে পারে। তবে নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।