লেবু গাছের জাত উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি হলো:
-
সঙ্করায়ন: দুটি ভিন্ন জাতের লেবু গাছের পরাগায়ন ঘটিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়। এ পদ্ধতিতে নতুন জাতের লেবু গাছে উভয় জাতের গুণাবলী বিদ্যমান থাকে।
-
মিউটেশন: লেবু গাছের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়। এ পদ্ধতিতে নতুন জাতের লেবু গাছে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে।
-
চয়ন: প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লেবু গাছ থেকে পছন্দসই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গাছ নির্বাচন করে নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়।
লেবু গাছের জাত উন্নয়নের জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়:
ধাপ ১: প্রয়োজনীয় জাতের নির্বাচন
প্রথমে লেবু গাছের যেসব বৈশিষ্ট্য উন্নত করতে চাওয়া হয় সেসব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান জাতের নির্বাচন করা হয়। যেমন, ফলের আকার, ওজন,রং, স্বাদ, রস, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি।
ধাপ ২: সঙ্করায়ন
প্রয়োজনীয় জাতের নির্বাচনের পর সেগুলোর পরাগায়ন ঘটিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়। এ পদ্ধতিতে কৃত্রিমভাবে পরাগায়ন করা হয়।
ধাপ ৩: মিউটেশন
লেবু গাছের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়। এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যেমন:
-
রাইজোজেনিক মিউটেশন: লেবু গাছের গোড়ায় রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করে মিউটেশন ঘটানো হয়।
-
ডায়াথার্মিক মিউটেশন: লেবু গাছের উপরে উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োগ করে মিউটেশন ঘটানো হয়।
-
গামা রে মিউটেশন: গামা রশ্মি ব্যবহার করে লেবু গাছের জিনগত পরিবর্তন ঘটানো হয়।
ধাপ ৪: চয়ন
উদ্ভূত নতুন জাতের মধ্যে পছন্দসই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গাছ নির্বাচন করা হয়। এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করা হয়, যেমন:
-
ফলের আকার, ওজন, রং, স্বাদ, রস
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
-
পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা
ধাপ ৫: পরীক্ষামূলক চাষাবাদ
পছন্দসই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গাছ নির্বাচনের পর সেগুলো পরীক্ষামূলক চাষাবাদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়। এ পদ্ধতিতে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করা হয়, যেমন:
-
ফলন
-
ফলের গুণগত মান
-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
-
পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা
উপরোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে লেবু গাছের নতুন জাত উদ্ভাবন করা হয়। এ পদ্ধতিটি দীর্ঘমেয়াদী ও ব্যয়বহুল হলেও ফলপ্রসূ।
বাংলাদেশে লেবু গাছের জাত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI) কাজ করছে। BARI এর মাধ্যমে উদ্ভাবিত কিছু লেবুর জাত হলো:
-
বারি লেবু-১ (এলাচী লেবু)
-
বারি লেবু-২
-
বারি লেবু-৩
এই জাতের লেবুগুলো উচ্চ ফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী এবং সুস্বাদু।