ঘোষনাঃ
সম্মানীত সদস্যবৃন্দ, আপনাদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এআই ব্যবহার করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কারণে সাইটের র‌্যাংক কমে গেছে। তাই এআই উত্তর আর অনুমোদন দেওয়া হবে না।
73 বার দেখা হয়েছে
"আন্তর্জাতিক বিষয়" বিভাগে করেছেন

2 উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
ত্রিশ বছরের যুদ্ধ প্রধানত জার্মানিতে সংঘটিত হয়েছিল যদিও বিভিন্ন সময়ে ইউরোপের প্রায় সকল দেশই এর সাথে কোন না কোনভাবে যুক্ত ছিল। এটি ইউরোপের ইতিহাসে দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ। ৩০ বছর ধরে একটানা চলা এই যুদ্ধকে পৃথিবীর আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়।

যুদ্ধের উৎপত্তি এবং অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু বলা বেশ কঠিন এবং একটিমাত্র বিষয়কে যুদ্ধের কারণ হিসেবে আখ্যায়িত করাও যায় না। প্রাথমিকভাবে এটি ছিল পুণ্য রোমান সম্রাজ্যের প্রোটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিকদের মধ্যকার একটি ধর্মযুদ্ধ যদিও সম্রাজ্যের মধ্যকার রাজনীতি নিয়ে বিরোধ এবং শক্তির ভারসাম্যেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাতে। ধীরে ধীরে এটি আরও সাধারণ যুদ্ধে রূপ নেয় যাতে ইউরোপের অধিকাংশ শক্তি অংশ নিতে বাধ্য হয়।এই সাধারণ পর্যায়ে যুদ্ধে ধর্মের চেয়েও অনেক বড় হয়ে দেখা দেয় ইউরোপের প্রধান শক্তি হওয়ার জন্য ফ্রান্স-হাবসবুর্গ বিরোধ যার ফলশ্রুতিতে ফ্রান্স ও হাবসবুর্গ শক্তির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। 

ত্রিশ বছরের যুদ্ধের একটি বড় প্রভাব ছিল অনেক বড় বড় অঞ্চল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাওয়া যার কারণ ছিল তথাকথিত বেল্লুম সে ইপসুম আলেত (Bellum se ipsum alet), অর্থাৎ অধিকৃত অঞ্চলের মানুষদের সম্পত্তি দিয়ে সৈন্যদের ভরণপোষণ ও যুদ্ধ অর্থায়ন। লাতিন ভাষায় বেল্লুম সে ইপসুম আলেত এর অর্থ "যুদ্ধ নিজেই নিজের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে"। দুর্ভিক্ষ ও রোগশোক বোহেমিয়া, নিম্ন অঞ্চলসমূহ এবং ইতালির মত অঞ্চলগুলোর জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছিল। দেউলিয়া হয়েছিল যুদ্ধরত অধিকাংশ শক্তি। প্রতিটি সেনাবাহিনীর মধ্যকার রেজিমেন্টগুলো ভাড়াটে ছিল না অর্থাৎ অর্থের জন্য তারা দল পরিবর্তন করতো না, কিন্তু রেজিমেন্টের মধ্যকার সৈন্যদের অধিকাংশই ছিল ভাড়াটে। তাছাড়া সে সময়কার সেনাবাহিনীর অর্থায়নের প্রক্রিয়ার কারণে নিয়মানুবর্তিতার ঘাটতি ঘটেছিল। তখন সেনাবাহিনীগুলোর অর্থ আসতো মূলত লুট করা সম্পত্তি এবং অধিকৃত অঞ্চল থেকে জোরপূর্বক আদায়কৃত সম্মানী থেকে। এ কারণে অধিকৃত অঞ্চলের মানুষদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। যুদ্ধের অনেকটা সময় ধরে কিছু বিতর্কের অবসান হয়নি। অবশেষে ত্রিশ বছরের যুদ্ধ শেষ হয় ওজনাব্র্যুক এবং ম্যুনস্টার এর চুক্তির মাধ্যমে যা ছিল বৃহত্তর ভেস্টফালিয়ার শান্তির অংশ।
0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন

ত্রিশ বছরের যুদ্ধ (১৬১৮-১৬৪৮) ছিল ইউরোপের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংঘাত। এটি মূলত পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে শুরু হলেও, পরবর্তীতে ইউরোপের অন্যান্য শক্তিগুলোও এতে জড়িয়ে পরে এবং এর ফলে মহাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। নিচে এই যুদ্ধের প্রধান কারণ এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আলোচনা করা হলো:

প্রধান কারণ:

 * ধর্মীয় বিভেদ: এই যুদ্ধের মূলে ছিল প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিকদের মধ্যেকার ধর্মীয় বিভেদ। ১৬১৭ সালে বোহেমিয়ার প্রোটেস্ট্যান্টরা তাদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করার প্রতিবাদে বিদ্রোহ করে, যা এই যুদ্ধের সূচনা করে।

 * রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা: পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে সম্রাট এবং বিভিন্ন রাজ্যের শাসকদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ছিল। সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত রাজ্যগুলো তাদের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে চাইত, যা সম্রাটের কেন্দ্রীয় শাসনের সাথে সংঘাত সৃষ্টি করে।

 * আন্তর্জাতিক ক্ষমতার লড়াই: হ্যাবসবার্গ সাম্রাজ্য (অস্ট্রিয়া ও স্পেন) এবং ফ্রান্সের মধ্যে ইউরোপের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইও এই যুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল। ফ্রান্স হ্যাবসবার্গদের ক্ষমতা কমাতে প্রোটেস্ট্যান্ট পক্ষকে সমর্থন করে।

 * বোহেমিয়ার বিদ্রোহ: ১৬১৮ সালে "ডিফেনেস্ট্রেশন অফ প্রাগ" (Defenestration of Prague) এর মাধ্যমে বোহেমিয়ার প্রোটেস্ট্যান্টরা তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং এর মাধ্যমে যুদ্ধের আগুন জ্বলে ওঠে।

দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব:

 * ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি চুক্তি (১৬৪৮): এই চুক্তির মাধ্যমে ত্রিশ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে এবং ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে।

 * রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণা প্রতিষ্ঠা: ওয়েস্টফালিয়া চুক্তি রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। এর মাধ্যমে প্রতিটি রাষ্ট্র তার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়ে চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কোনো বহিরাগত শক্তি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না – এই নীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।

 * পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের দুর্বলতা: এই যুদ্ধের ফলে পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পরে এবং এর অন্তর্ভুক্ত রাজ্যগুলোর স্বাধীনতা বৃদ্ধি পায়। সাম্রাজ্য কার্যত ছোট ছোট স্বাধীন রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়।

 * ফ্রান্সের উত্থান: ফ্রান্স এই যুদ্ধের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং ইউরোপের রাজনীতিতে তার প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

 * নতুন রাজনৈতিক বিন্যাস: ত্রিশ বছরের যুদ্ধের পর ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্র নতুন করে সাজানো হয়। বিভিন্ন রাজ্যের সীমানা পরিবর্তন হয় এবং নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে।

 * ধর্মীয় সহনশীলতা: এই যুদ্ধের ভয়াবহতা মানুষকে ধর্মীয় সহনশীলতার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সাহায্য করে। যদিও ধর্মীয় বিভেদ তখনও ছিল, তবে এর পরবর্তী সময়ে ধর্মীয় কারণে বড় ধরনের যুদ্ধ কম দেখা যায়।

সংক্ষেপে, ত্রিশ বছরের যুদ্ধ ইউরোপের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ ছিল। এটি শুধু একটি ধর্মীয় বা রাজনৈতিক সংঘাত ছিল না, বরং এটি ইউরোপের রাজনৈতিক কাঠামো এবং রাষ্ট্রীয় ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করে দিয়েছিল। ওয়েস্টফালিয়ার শান্তি চুক্তি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করে, যেখানে প্রতিটি রাষ্ট্র তার সার্বভৌমত্ব ও স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে সক্ষম।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

36,000 টি প্রশ্ন

35,255 টি উত্তর

1,738 টি মন্তব্য

3,753 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
31 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 31 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 14363
গতকাল ভিজিট : 11577
সর্বমোট ভিজিট : 51869229
এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
...