বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নামকরণ নিয়ে বেশ কিছু ইতিহাস ও লোককাহিনি প্রচলিত রয়েছে। যদিও এর সঠিক কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি, তবে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য তত্ত্ব ও ধারণা হলো:
১. ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে নামকরণ
-
অনেকের মতে, ঢাকার নামকরণ হয়েছে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে।
-
ঢাকেশ্বরী মন্দির একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দির, যা বলা হয় বল্লাল সেন বা তার পূর্ববর্তী কোনো শাসক নির্মাণ করেছিলেন।
-
“ঢাকেশ্বরী” শব্দের অর্থ "ঢাকার ঈশ্বরী" বা "ঢাকার দেবী"। মন্দিরের নাম থেকেই "ঢাকা" নামটি এসেছে বলে ধারণা করা হয়।
২. ঢাক বাজানোর সঙ্গে সম্পর্ক
-
আরেকটি প্রচলিত কাহিনি হলো, মুঘল শাসক ইসলাম খান ১৬১০ সালে যখন ঢাকাকে মুঘল রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন, তখন তিনি একটি ঢাক বাজিয়ে এই সংবাদ প্রচার করেন।
-
সেই ঢাক বাজানোর ঘটনার কারণে শহরটির নাম রাখা হয় “ঢাকা”।
৩. গাছের নাম থেকে
-
কিছু ঐতিহাসিকের মতে, ঢাকার নামকরণ "ঢাক" নামের এক ধরনের গাছ থেকে হয়েছে, যা একসময় এই অঞ্চলে প্রচুর পাওয়া যেত।
৪. পালি বা সংস্কৃত শব্দ থেকে উদ্ভব
-
"ঢাকা" শব্দটি সংস্কৃত বা পালি ভাষা থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। সংস্কৃত ভাষায় "ঢাকা" শব্দের অর্থ "ঢেকে রাখা"।
-
কিছু গবেষক মনে করেন, ঢাকার ভৌগোলিক অবস্থান বা এর প্রতিরক্ষার জন্য চারপাশে তৈরি কেল্লা বা দুর্গের কারণে এ নাম এসেছে।
৫. মুঘল প্রশাসনিক কেন্দ্র
-
মুঘল শাসনামলে ঢাকাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এই সময়ে শহরের গুরুত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে নামটি আরও প্রসিদ্ধ হয়।
উপসংহার:
ঢাকার নামকরণের পেছনে একাধিক তত্ত্ব ও কাহিনি থাকলেও ঢাকেশ্বরী মন্দির এবং ঢাক বাজানো সম্পর্কিত গল্পই সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে নামকরণের এই তত্ত্বগুলো ইতিহাসের একটি অংশ এবং এর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।